আজ কৃষিবিদ দিবস অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২২ আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি, কৃষিবিদ দিবস। ১৯৭৩ সালের এ দিনে কৃষিবিদদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার মর্যাদা দেওয়ার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি কৃষিবিদ দিবস হিসেবে পালন করছে বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন। দিবসটি উপলক্ষে আজ সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন কমপ্লেক্স থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হবে। পাশাপাশি ইনস্টিটিউশনের ৬৪টি জেলা শাখায় ও দেশের বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শোভাযাত্রা ও আলোচনাসভাসহ নানা কর্মসূচি পালিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, কৃষিই বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতির প্রাণ। অনাদিকাল থেকে এদেশের মানুষ খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থানসহ মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য কৃষির উপর নির্ভর করে আসছেন। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে স্বাধীনতাত্তোরকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি শিক্ষা, গবেষণা, সম্প্রসারণ ও কৃষির উপকরণ বিতরণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে কৃষির উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতার প্রদর্শিত পথেই বর্তমান সরকার কৃষির সার্বিক উন্নয়নে নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। ফলশ্রুতিতে আমরা এখন দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। পাশাপাশি শাকসবজি ও ফলমূলসহ মাছ, মাংস, দুধ, ডিম ইত্যাদির ব্যাপক উৎপাদন জাতীয় পর্যায়ে দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে দেশে মাথাপিছু জমির পরিমাণ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। দেশের প্রায় ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা পূরণে কৃষি বিজ্ঞানীদের নতুন নতুন প্রযুক্তি এবং অধিক উৎপাদনশীল জাতের বীজ উদ্ভাবন, উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ মাছ, মাংস, ডিম, দুধ উৎপাদনে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। পাশাপাশি কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, উৎপাদন ও বিপণনের ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক ও কীটনাশক ব্যবহারে সচেতন হওয়া আবশ্যক। কৃষি ব্যবস্থাপনায় আধুনিক যন্ত্রপাতি তথা কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং লাভজনক কৃষিতে রূপান্তরের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কৃষিবিদদের চাকরি প্রথম শ্রেণির মর্যাদা প্রদানের ঘোষণা দেন। যা এদেশের কৃষি, কৃষক ও কৃষিবিদদের জন্য ছিল ঐতিহাসিক মাইলফলক। ফলে অধিকতর মেধাবী শিক্ষার্থীরা কৃষি শিক্ষায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের পদাংক অনুসরণ করে বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১০ টাকায় কৃষকদের জন্য ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুযোগ করে দিয়েছে। বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ১ লক্ষ ৫১ হাজার ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। কৃষকদের প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ কৃষক উপকরণ কার্ড দেওয়া হয়েছে। বর্গাচাষিদের জন্য জামানতবিহীন কৃষি ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৪৮৯ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা কৃষি প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় সারের জন্য ১৮ জন কৃষককে প্রাণ দিতে হয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, পক্ষান্তরে, কৃষিবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার কয়েক দফা সারের দাম কমিয়েছে। সেচের বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ রিবেট প্রদান করা হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০২০ পর্যন্ত সার, বিদ্যুৎ ও ইক্ষু খাতে মোট ৮২ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষকের পুষ্টি নিশ্চিতকরণ ও আয়ের উৎস সৃষ্টি করতে প্রতিটি ইউনিয়নে ৩২টি করে মোট ১ কোটি ৪০ লক্ষ ৩৮৭টি পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হচ্ছে। নিরাপদ শাক-সবজির যোগান ও কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে রাজধানীসহ ৪১ জেলায় ‘কৃষকের বাজার’ স্থাপন করা হয়েছে। কৃষকের কৃষি যন্ত্রের ক্রয়মূল্যের উপর ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ উন্নয়ন সহায়তার মাধ্যমে হ্রাসকৃত মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে। ২০১০ থেকে ২০২১ পর্যন্ত কৃষকের জন্য মোট ৭১ হাজার ২৪০টি কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়। যার মধ্যে অত্যাধুনিক কম্বাইন হারভেস্টর, রিপার, সিডার, পাওয়ার টিলারসহ অন্যান্য কৃষি যন্ত্রপাতি রয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে কৃষিতে রোল মডেল। আমরা বিশ্বে ধান উৎপাদনে ৩য়, সবজিতে ৩য়, আলু উৎপাদনে ৭ম, কাঁঠাল উৎপাদনে ২য়, আম উৎপাদনে ৭ম, পেয়ারাতে ৮ম, পাট উৎপাদনে ২য় এবং রফতানিতে ১ম। আমাদের সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে খাদ্য শস্যের উৎপাদন ২০০৮-২০০৯ সালের ৩ কোটি ২৮ লক্ষ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন থেকে বেড়ে ২০২০-২০২১ সালে ৪ কোটি ৫৫ লক্ষ ৫ হাজার মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের কৃষি অনুকূল নীতি ও প্রণোদনায় কৃষক ও কৃষিবিদদের মিলিত প্রচেষ্টা আমাদের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা করে জাতির পিতার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে অবদান রাখবে। Related posts:বিশ্বে নারী নেতৃত্বের শীর্ষে শেখ হাসিনাজি এম কাদেরের সঙ্গে জোট না করতে প্রধানমন্ত্রীকে রওশনের অনুরোধকরোনা প্রাণ নিল আরও ৫০ জনের, নতুন শনাক্ত ১৭৪২ Post Views: ১৮৪ SHARES জাতীয় বিষয়: