শেরপুরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে স্বাস্থ্য বিভাগের ১৪টি পুরাতন গাড়ি অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ৩:৫৪ অপরাহ্ণ, মে ২৮, ২০২২ নানা কারণে শেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ১৪টি পুরাতন গাড়ি বিক্রি না করায় খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন একই জায়গায় অযত্নে-অবহেলায় পড়ে থাকায় চুরি হচ্ছে এসব গাড়ির যন্ত্রপাতি। স্থানীয়দের দাবি, অকেজো গাড়িগুলো নিলামে বিক্রি, আর বাকিগুলো সংস্কার করে জনগণের সেবার আওতায় আনা হোক। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, সরকারি গাড়িগুলো নিলামে বিক্রির প্রক্রিয়া জটিল, নিয়মতান্ত্রিকভাবে সেগুলো নিলামের ব্যবস্থা করা হবে। স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল ও চারটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন থেকে পড়ে আছে ১৪টি অ্যাম্বুলেন্স, জিপ ও মাইক্রোবাস। গাড়িগুলো নষ্ট হওয়ার পর আর মেরামত না করে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে তা হাসপাতালের যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিন অযত্ন আর অবহেলায় মাটিতে পড়ে থাকা গাড়িগুলো এখন প্রায় অকেজো। এসব যানবাহনের কোনটি ১৫ বছর, আবার কোনটি ৮-১০ বছর ধরে পড়ে আছে। বিদেশি সরকার ও সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তিনটি নতুন অ্যাম্বুলেন্স রহস্যজনক কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই বিকল হয়ে পড়ে আছে। প্রায় চার বছর ধরে গাড়ি তিনটির জায়গা হয়েছে জেলা সদর হাসপাতালের এক কোণায়। স্থানীয়রা জানান, ১৪টি গাড়ির মধ্যে ৪-৫টি গাড়ি এখনো সংস্কার করার মত রয়েছে। আর বাকিগুলো নিলামে বিক্রি হলেও কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হতো। সরেজমিনে জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় কয়েকটি গাড়ির ইঞ্জিনসহ যন্ত্রপাতিও নেই গাড়িতে। সুযোগ বুঝে চোরেরা চুরি করে নিয়ে গেছে বা ভিন্নভাবে খোয়া গেছে। এখন শুধু গাড়ির বডিগুলো পড়ে আছে। এখানকার পাহারাদাররাও জানে না কিভাবে খোয়া গেছে যন্ত্রপাতিগুলো। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একজন পাহারাদার জানান, বেশিরভাগ গাড়িই ১৪/১৫ বছর ধরে এভাবেই পড়ে আছে। সব নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এগুলো তো এখন আর নিলামে তোলার অবস্থাতেও নেই। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা মো. মুকুল হোসেন বলেন, এই হাসপাতালে সরকারি মাত্র একটা অ্যাম্বুলেন্স। অথচ হাসপাতালের পিছনে কয়েকটা অ্যাম্বুলেন্স পড়ে থেকে নষ্ট হইতেছে। এগুলো ঠিকঠাক করে চালাইলেও তো রোগীরা সেবা পাইতো। আকবর আলী নামে আরেক সেবাপ্রার্থী বলেন, সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স দিয়া রোগী ঢাকা-ময়মনসিংহ নিয়া যাইতে হয়। অথচ নষ্টগুলা ঠিক করলে আমরা কম খরচে রোগী নিয়া যাবার পাইতাম। সরকারি সম্পদগুলো এমনে কইরা নষ্ট হইতেছে, দেখার কেউ নাই। একই কথা জানান মো. আবুল হাসেম, আহম্মদ উদ্দিন, মোছা. আসমা বেগমসহ বেশ কয়েকজন। স্থানীয় কয়েকজন অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি গাড়ি ঠিক না করে, তাহলে এসব গাড়ি ক্রয় করার জন্য অনেকেই রয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নিলাম ডেকে বিক্রি না করায় দিন দিন গাড়িগুলো আরও অকেজো হয়ে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লক্ষ লক্ষ টাকার গাড়িগুলো যত্রতত্র ফেলে রেখে সরকারের ক্ষতি না করে দ্রুত অকেজো গাড়িগুলো নিলামে তুলে বিক্রি এবং বাকিগুলো সংস্কার করে জনগণের সেবার আওতায় আনার দাবি তাদের। এ ব্যাপারে শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. অনুপম ভট্টাচার্য্য বলেন, সরকারি গাড়ি বিক্রির জন্য নিলামে তোলার প্রক্রিয়াটা একটু জটিল ও সময়সাপেক্ষ। গাড়িগুলো স্থানীয়ভাবে নিলামে দেওয়ার কোন নিয়ম নেই। তাই গাড়িগুলো নিলামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি শিগগিরই গাড়িগুলোর তালিকা তৈরি করে নিলামে বিক্রির জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠাবো। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলেই সেগুলো নিলামে তুলে বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে। Related posts:শেরপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের ২ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশশেরপুর রোটার্যাক্ট ক্লাব ও ইন্টার্যাক্ট ক্লাবের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিতশেরপুরে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ৯ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ছিনতাই, গ্রেফতার ১ Post Views: ৫১৭ SHARES শেরপুর বিষয়: