শেরপুরে মাঝপথে বারবার যাত্রী উঠানোর প্রতিবাদ করায় যাত্রীর উপর হামলা

প্রকাশিত: ৮:৪১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২

ঢাকা-শেরপুর সড়কে গেইটলক বাসে মাঝপথে যাত্রী উঠানোর প্রতিবাদ করায় শেরপুরে মো. মুক্তা মিয়া (৩০) নামে এক যাত্রীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে খোদ বাসের মালিক, চালক, হেলপারসহ স্টাফরা। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ৩ দিন যাবত হাসপাতালের বেডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে মুক্তা মিয়া। মুক্তা জামালপুর সদরের রাঙামাটিয়া এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে ও শেরপুর বিচার বিভাগের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি। এর আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর শনিবার রাতে শহরের নবীনগর বাস টার্মিনালে ওই মারধরের ঘটনা ঘটে।

এদিকে ওই ঘটনায় ছানোয়ার হোসেন ছাদেক (৪২) নামে ওই বাসের এক হেলপারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে সদর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের সিরাজুল হক নেমতার ছেলে। সোমবার দুপুরে ৫ দিনের পুলিশ রিমাণ্ডের আবেদনসহ তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে মঙ্গলবার রিমাণ্ডের বিষয়ে শুনানীর তারিখ নির্ধারণ করে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
জানা যায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে গাজীপুরা বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকা থেকে শেরপুরগামী জোনাকি-বৃষ্টি গেইটলক বাসে (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৫৫৬৬) উঠেন মুক্তা মিয়া। মাঝপথে শম্ভুগঞ্জ ব্রিজমোড়ে ওই বাসে পুনঃপুন যাত্রী উঠানোর কারণে বাসটি দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করলে প্রতিবাদ করেন যাত্রী মুক্তা। এ নিয়ে বাসের ড্রাইভার, সুপারভাইজার ও হেলপারদের সাথে তার রীতিমত বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তারা মুক্তাকে নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছার পর দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। ওই অবস্থায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাসটি নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছলে মালিক জাহাঙ্গীর আলমের হুকুমে বাসের সকল স্টাফ ও আসাদ নামে স্থানীয় এক নাইটগার্ড দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মুক্তার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় মুক্তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। তার মাথায়, চোখে, ঠোঁটেসহ শরীরজুড়ে রক্তাক্ত আঘাতের ক্ষত রয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় বিচার বিভাগের কর্মচারী হওয়ায় মুক্তাকে দেখতে ছুটে যান জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আল মামুন। ওইসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. আবু বকর সিদ্দিক ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল অসুস্থ মুক্তাকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
অন্যদিকে কিছুটা সুস্থ হওয়ায় মুক্তার কাছ থেকে বিস্তারিত শুনে রবিবার সন্ধ্যায় ঘটনার বিষয়ে জোনাকি বৃষ্টি নামক বাসের মালিক জাহাঙ্গীর আলমসহ ওই বাসের চালক, সুপারভাইজার, হেলপার ও নবীনগর বাস টার্মিনালের এক নাইটগার্ডসহ ৭/৮জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন মুক্তার ভাই ও বিচার বিভাগের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মোস্তাফিজুর রহমান মনি।
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল জানান, ওই ঘটনায় ইতোমধ্যে বাসের এক হেলপারকে গ্রেফতার করে রিমাণ্ডের আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।