শেরপুরে ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই স্কুলছাত্র লাবন হত্যারহস্য উন্মোচন, হত্যায় জড়িত ৪ জন গ্রেফতার

প্রকাশিত: ৬:১৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২

ডান্ডি খেয়ে স্কুলছাত্র লাবনকে হত্যা করে বন্ধুরাই

শেরপুর সদর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা বেতমারী-ঘুঘুরাকান্দি ইউনিয়নের সুবর্ণচরে স্কুলছাত্র নাঈম মিয়া লাবন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। ওই ঘটনায় জড়িত লাবনের ৪ বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ২ জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুরে সদর থানায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং-এ ওইসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া।

তিনি জানান, গত মঙ্গলবার মো. মাসুদ রানার ছেলে ও গোপালনগর মডেল একাডেমির ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র নাইম মিয়া লাবন স্কুল থেকে ফিরে বিকেলে বন্ধুদের সাথে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরদিন বুধবার বাড়ির পাশে একটি লেবু বাগানে তার ক্ষতবিক্ষত লাশ দেখতে পায় লাবনের মা লাইলি বেগম। পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ লাশের আলামত সংগ্রহ করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।


এরপর সদর থানা পুলিশের একাধিক চৌকস দল হত্যাকান্ডের মূল ঘটনা উদঘাটনে অভিযান শুরু করে। আটক করা হয় সন্দেহভাজন লাবনের ৪ ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে। পরে তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে বেরিয়ে আসে হত্যাকাণ্ডের পেছনে থাকা রোমহর্ষক ঘটনা।
মোহাম্মদ হান্নান মিয়া জানান, মঙ্গলবার বিকেলে খেলা শেষে ৪ বন্ধুর সাথে ড্যান্ডি (একপ্রকার আঠা/গাম) সেবন করতে লোক চক্ষুর আড়ালে লেবু বাগানে যায় তারা। এরপর অতিরিক্ত মাদক সেবনের ফলে তারা একে অপরের সাথে মারামারিতে জড়ায়। মারামারির এক পর্যায়ে লাবন মাটিয়ে লুটিয়ে পড়লে মনির গলা চেপে ধরে, আরেক বন্ধু আসলাম সজোরে মুখ চেপে ধরে, হৃদয় নামের আরেক বন্ধু লাবনের পা চেপে ধরে রাখে। তখন লাবনের ডান হাত ধরে থাপ্পড় মারে নয়ন। কিছুক্ষণ পর লাবন নিস্তেজ হয়ে পড়লে পালিয়ে যায় তারা। পরে হত্যার বিষয়টি গোপন রেখে বৃহস্পতিবার স্বাভাবিকভাবেই স্কুলে যায় ওই চার বন্ধু। তদন্তের এক পর্যায়ে নয়ন, হৃদয়, মনির ও আসলামকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং তাদের তথ্যমতে, ঘটনাস্থল থেকে আসামিদের সেবনকৃত ১২ টি ড্যান্ডি গামের মোড়ক উদ্ধার করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংকালে সদর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদলসহ জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।