শেরপুরে একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগে ১৫ গ্রামের মানুষ

প্রকাশিত: ৪:৫৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২৫

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে ১৫ গ্রামের মানুষকে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই এলাকায় গত ৫৫ বছরে অনেক জনপ্রতিনিধি বদল হলেও কখনো এই সেতুর দিকে কারো নজর পড়েনি।

ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশা বলেন, সবশেষ বিএনপি সরকারের সময়ে এ নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য আর্থিক বরাদ্দ পাওয়া যায়। টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদার ও নিয়োগ দেওয়া হয়। কাজ শুরুর প্রস্তুতিও নেয় ঠিকাদার। কিন্তু দুই নেতার আধিপত্য বিস্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কাজটি বন্ধ হয়ে যায়।
ওই এলাকার আদিবাসী নেত্রী রবেতা ম্রং বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শুধু শুনে আসছি সেতু হবে, রাস্তা হবে। কিন্তু হচ্ছে না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, মরার আগে সেতু দেখে যেতে পারব কি না জানিনা।
ডাকাবর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম, মোসলেম উদ্দিন, সোলাইমান, শহিদুল ইসলাম, মোতালেব হোসেনসহ গ্রামবাসীরা বলেন, নির্বাচনের সময় সবাই এ নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করে দেওয়ার নাম করে শুধু আমাদের কাছে ভোট নেয়। কিন্তু নির্বাচনের পর কেউ আর আমাদের খোঁজখবর নেয় না। এ নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে ১৫ গ্রামের মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গ্রামবাসীরা জনগণের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে জরুরি ভিত্তিতে এ নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান।
জানা গেছে, ডাকাবর রামেরকুড়া, নুনখোলা, শালচুড়া, ডেফলাই, নলকুড়া,গজারিকুড়া ফাকরাবাদ, বনকালি, মরিয়মনগর,ভারুয়া, জারুলতলা, বাঐবাধা, কুসাইকুড়াসহ ১৫টি গ্রামের শত শত মানুষ প্রতিদিন এপথে যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু এ নদীর ওপর সেতু না থাকায় শুষ্ক মৌসুমে বাসের সাঁকো ও বর্ষা মৌসুমে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে উপজেলা সদরে আসতে হয়। কোনো কোনো সময় নৌকাযোগে পারাপার হতে হচ্ছে। এ সময় স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিশু কিশোররা স্কুল-কলেজে যাতায়াতের সময় চরম ভোগান্তির শিকার হয়। এলাকায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। গরু-ছাগল পারাপারে কৃষকদের হতে হয় নানা বিড়ম্বনার শিকার।
নলকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রুকুনুজ্জামান বলেন, এ নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি ওঠে দেশ স্বাধীনের পর থেকেই। এ নদীতে একটি সেতু নির্মাণের বিষয়ে বিভিন্ন সময় উপজেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় আবেদন করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছ থেকে আশ্বাসও পাওয়া গেছে। কিন্তু আজো তা বাস্তবায়িত হয়নি।
ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রকৌশলী শুভ বসাক বলেন, এ নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের বিষয়ে প্রকল্প প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে তা নির্মাণ করা হবে।