২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে: প্রধানমন্ত্রী অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ৬:১৭ অপরাহ্ণ, মে ২৮, ২০২৩ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে দেশে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজমান রয়েছে। পরিকল্পিতভাবে দেশের উন্নয়ন করা হচ্ছে। মানুষ ভিক্ষা করে নয়, নিজের মর্যাদা নিয়ে চলবে এটাই আমাদের লক্ষ্য। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির ক্ষেত্রে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। আমরা আর অশান্তি, সংঘাত চাই না। আমরা সবার উন্নতি চাই। রোববার (২৮ মে) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের আলোচনায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আলোচনা করে ছিটমহল বিনিময় করেছি। তাহলে কেন এই অস্ত্র ব্যবসা। সেটা কেন শিশুদের খাবারের জন্য ব্যয় করা হয় না। আমরা রোহিঙ্গাদের জায়গা দিয়েছি। কারণ আমাদের মনে ছিল ৭১ এর শরণার্থী শিবিরের কথা। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তৎকালীন শান্তি পরিষদের মহাসচিব বলেছিলেন, শেখ মুজিব কেবল বঙ্গবন্ধু নন, তিনি বিশ্ববন্ধু। মাত্র ৯ মাসে তিনি সংবিধান উপহার দেন। যাতে শান্তির কথা ও দেশের মানুষের মৌলিক অধিকারের কথা ছিল। তিনি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রজীবন থেকে তিনি নির্যাতিত মানুষের পাশে ছিলেন, সেই ১৯৪৩ সালে দুর্ভিক্ষে ছাত্র শেখ মুজিব মানুষের পাশে ছিলেন। ৪৫ সালে ডাঙ্গার সময় নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শেখ মুজিব ডাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সব সময় তিনি শান্তির পথে ছিলেন। শান্তির কথায় তিনি বলে গেছেন। জাতির পিতা পররাষ্ট্রনীতিরকথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা পররাষ্ট্রনীতি আমরা আজও মেনে চলি। মেনে চলতে চাই। জাতির পিতা সব সময় মানুষের কল্যাণের নিজের জীবনকে উৎস কর্ম করছেন। বঙ্গবন্ধু শান্তিতে বিশ্বাস করতেন। জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেওয়ার সময়ও তিনি শান্তির কথা বলেছিলেন। যিনি সর্বদা শান্তির কথা বলে গেছেন, তাকেই জীবন দিতে হলো। প্রতিনিয়ত স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা সবসময় শান্তিতে বিশ্বাস করি। দারিদ্র্যের হার ৪১ ভাগ থেকে ১৮ ভাগে নামিয়ে এনেছি। এ দেশে কেউ দরিদ্র, ভূমিহীন থাকবে না। সবার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে। যা জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল। জাতির পিতাকে হত্যার পর একের পর এক ক্যু হয়। অনেককে হত্যা করা হয়। এমন একটা অশান্ত পরিবেশে দেশের মানুষকে ২১ বছর কাটাতে হয়েছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এবং মূল বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও গবেষক মোনায়েম সরকার। মূল বক্তব্যের ওপর আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও বিশিষ্ট লেখক আনোয়ারা সৈয়দ হক। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু। শুরুতেই বঙ্গবন্ধু ও তার জুলিও-কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলিও-কুরি শান্তি পদক প্রদানের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে স্মারক ডাক টিকিট ও প্রথম দিনের কভার উন্মোচন করেন। তিনি দিবসটি উপলক্ষ্যে একটি স্যুভেনির প্রকাশনার প্রচ্ছদও উন্মোচন করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ কর্তৃক জুলিও-কুরি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। ফিদেল কাস্ত্রো, হো চি মিন, ইয়াসির আরাফাত, সালভাদর আলেন্দে, নেলসন ম্যান্ডেলা, ইন্দিরা গান্ধী, মাদার তেরেসা, কবি ও রাজনীতিবিদ পাবলো নেরুদা, জরহরলাল নেহেরু, মার্টিন লুথার কিং এবং লিওনিদ ব্রেজনেভের মতো বিশ্ব নেতারা এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। বিশ্ব শান্তি পরিষদের শান্তি পুরস্কারটি ছিল বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। জুলিও-কুরি শান্তি পুরস্কার ছিল বাংলাদেশের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কার। এ মহান অর্জনের ফলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধুতে পরিণত হন। Related posts:দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যা করার দরকার করবো: প্রধানমন্ত্রীসারাদেশে করোনায় আরও ৪১ জনের মৃত্যুপুলিশ সদস্যের আত্মত্যাগে বাহিনী-পরিবার প্রিয়জনকেই হারায় : আইজিপি Post Views: ১০৫ SHARES জাতীয় বিষয়: