শেরপুরের খোরশেদের বিয়েতে মাতলেন গ্রামবাসী অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১:১০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৩, ২০২৩ অন্যরকম এক বিয়ে উদযাপন করেছেন শেরপুরের মানুষ। ৩ ফুট উচ্চতার বর খোরশেদ আলমের বিয়ের আনন্দে মেতেছিলেন তারা। দুই শতাধিক পাত্রী দেখার পর ঠিক হয় এ বিয়ে। জাঁকজমকপূর্ণ এ বিয়েতে অতিথিও ছিলেন সাড়ে ছয়’শ জন। এমন আয়োজনে খুশি স্থানীয়রা। আর খোরশেদ-বর্ষা দম্পতির জন্য দোয়া চাইলেন স্বজনরা। সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের মধ্য বয়ড়া গ্রামের মাখন মিয়ার ২ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে সবার বড় খোরশেদ আলম। আর খোরশেদ বিয়ে করেছেন শেরপুর পৌর শহরের দিঘারপাড় মহল্লার বাচ্চু মিয়ার মেয়ে খাদিজা আক্তার বর্ষাকে। ১২ আগস্ট শনিবার তার নিজের বাড়িতে হয় বৌভাত অনুষ্ঠান। খোরশেদের মামা দুলাল উদ্দীন (৫০) বলেন, ‘জন্ম থেকেই আমার ভাগিনা শারীরিক প্রতিবন্ধী। ২৮ বছর বয়সি খোরশেদের দৈহিক উচ্চতা মাত্র ৩ ফুটের মতো। ছোটসময় স্থানীয় একটি স্কুলে ভর্তি করালে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করে। পরে অভাবের সংসারে আর পড়ালেখা করানোর সুযোগ হয়ে ওঠেনি। সংসারের হাল ধরতে অনেকটা বাধ্য হয়েই জীবিকার তাগিদে ১৪ বছর আগে মোটরসাইকেলের গ্যারেজে কাজ নেন। কিন্তু সেখানেও বিপত্তি। খর্বাকৃতির হওয়ায় ভাগিনাকে প্রথমে কেউ গ্যারেজে নিতে চায়নি। কারণ হিসেবে মিস্ত্রিরা বলেছে, তাকে দিয়ে ত আর মোটরসাইকেল চালিয়ে ট্রায়াল দেওয়ানো যাবেনা। পরে ঘুরতে ঘুরতে আমিনুল ইসলাম নামে একজন গ্যারেজ মালিকের কাছে আশ্রয় পান। আস্তে আস্তে ভাগিনা মোটরসাইকেলের সব কাজ আয়ত্ব করে নেন। নানা বাঁধা বিপত্তি ডিঙিয়ে নিজে তিনি এখন সফল মিস্ত্রি।’ খোরশেদের আরেক মামা আবুল হাসেম (৭০) বলেন, ‘আমার বোনের চার সন্তানের মধ্যে একজন মারা গেছে। আর খোরশেদের শারিরীক একটু সমস্যা আছে। বাকি সবাই সুস্থ ও স্বাভাবিক। খোরশেদ নিজেকে পরিবারের বোঝা না রেখে আয়ক্ষম করে গড়ে তুলেছেন। তার আয়েয় আমার বোনের সংসার চলছে। তার এমন বিয়েতে আমরা খুব খুশি।’ খোরশেদের খালাতো ভাই সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আমরা খোরশেদ ভাইয়ের বিয়েতে খুব আনন্দ করেছি। আমরা কখনো ভাবিনি যে, ভাইয়ের বিয়ে এতো জাঁকজমকভাবে হবে। কমপক্ষে হাজার খানেক মানুষ দেখতে এসেছে। বিয়েতে মেহমানই ছিলো সাড়ে ছয়’শ জন। আর শহরের বিভিন্ন মহল্লার উৎসুকদের ভিড় যেন কমছেই না। সবাই খুব আনন্দিত। ভাবিও খুব চমৎকার মানুষ। আশা করি তাদের দাম্পত্য জীবন সুখি হবে।’ খোরশেদের মা খোদেজা বেগম বলেন, ‘আমার চার সন্তানের মধ্যে খোরশেদ সবার বড়। অভাবের কারণে তাকে বেশি পড়াতে পারিনি। সে এখন নিজের পায়ে দাড়িঁয়েছে। আমার বউমা খুব ভালো মেয়ে। সবার কাছে তাদের জন্য দোয়া চাই।’ খাদিজা আক্তার বর্ষার বাবা বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘একসময় আমি ট্রাক গাড়ি চালাতাম। আমার পরিবারে ছয়জন সদস্য। আমার চার সন্তান। তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে বর্ষা মেঝো। সজবরখিলার ঘটক বদু মিয়া এ বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে। তারপর যাচাই-বাছাই শেষে আমরা রাজি হয়। আমি এ বিয়েতে খুব খুশি। সবার কাছে দোয়া চাই তারা যেন সুখি হতে পারে।’ ঘটক বধু মিয়া বলেন, ‘খোরশেদকে আমি ব্যক্তিগতভাবে ১০বছর ধরে চিনি। সে খুব ভালো মেকানিক। তবে খোরশেদের বিয়ে এতা সহজ ছিলো না। আমি প্রায় দেড় বছর ধরে পাত্রী খুঁজছি। প্রায় ২ শতাধিক মেয়ে দেখার পর বিয়ে ঠিক করতে পেরেছি। এতো অপেক্ষার পর বিয়েটা করাতে পেরে আমারও খুব খুশি লাগছে। সবাই ওদের দোয়া করবেন। Related posts:নকলায় হেফাজতে ইসলাম পৌর কমিটি গঠন: সভাপতি তোফায়েল, সা.সম্পাদক ইসমাঈলজন্মাষ্টমী উৎসব উপলক্ষে শেরপুরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিতশেরপুরে হাসপাতালের ৬ তলার বারান্দা থেকে লাফ দিয়ে রোগীর আত্মহত্যা Post Views: ২৭১ SHARES শেরপুর বিষয়: