হাসনাতের বক্তব্য হাস্যকর ও অপরিপক্ব, সেনাসদর অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ৩:০৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৩, ২০২৫ ‘রিফাইন্ড (সংশোধিত) আওয়ামী লীগ’ গঠনে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে চাপ দেওয়ার বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ সম্প্রতি ফেসবুকে যে পোস্ট দিয়েছেন, তাতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সেনাবাহিনী সদর দপ্তর। সুইডেনভিত্তিক নেত্র নিউজের এক প্রতিবেদনে এমন প্রতিক্রিয়া জানানোর তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। শনিবার (২২ মার্চ) নেত্র নিউজে এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে সেনাসদরের বিবৃতি উল্লেখ করা হয়। সেনাসদরের বিবৃতি: হাসনাত আব্দুল্লাহর পোস্ট ‘অত্যন্ত হাস্যকর ও অপরিপক্ব গল্পের সম্ভার’। নেত্র নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার নেত্র নিউজকে দেওয়া সেনাসদরের এক বিবৃতিতে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যে সেনানিবাসে খোদ সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গেই ১১ মার্চ বৈঠকটি হয়েছিল। তবে হাসনাত আব্দুল্লাহকে ‘ডেকে নিয়ে যাওয়া এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের বিষয় নিয়ে তাদের প্রস্তাব বা চাপ প্রয়োগের’ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। বরং হাসনাত আব্দুল্লাহ ও তার দলের আরেক মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমের আগ্রহেই ওই বৈঠকটি হয়েছিল বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নতুন রূপে পুনর্বাসনের বিষয়ে সেনানিবাসের কাছ থেকে ‘ভারতের পরিকল্পনা’ উপস্থাপন করা হয়েছে—শুক্রবার (২১ মার্চ) হাসনাত আব্দুল্লাহর এমন ফেসবুক পোস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। নেত্র নিউজের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নেত্র নিউজের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে একজন মুখপাত্রের মাধ্যমে বক্তব্য দেয় সেনাসদর। হাসনাত আব্দুল্লাহর পোস্টকে ‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি বৈ অন্য কিছু নয়’ বলেও মন্তব্য করা হয়েছে সেনাসদরের বিবৃতিতে। এ ছাড়া ২৭ বছর বয়সী এই ছাত্রনেতার বক্তব্যকে ‘অত্যন্ত হাস্যকর ও অপরিপক্ব গল্পের সম্ভার’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছে সেনাবাহিনী। বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে যে গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিল, তার সূচনা হয়েছিল সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালে আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে ছাত্রদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মাধ্যমে। পরবর্তীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে একটি প্ল্যাটফর্ম গঠিত হলে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রিসভায় (উপদেষ্টা পরিষদে) ওই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্তত তিনজন ছাত্রনেতা দায়িত্ব পালন করেন। তাদেরই একজন নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি নামে একটি নতুন দল গঠন করেছেন। সেই দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। ওই দলে দুই আঞ্চলিক মুখ্য সমন্বয়কের পদ পেয়েছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম। শুক্রবার (২১ মার্চ) এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে হাসনাত আব্দুল্লাহ দাবি করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন ও ঢাকার মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে সামনে রেখে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। সুনির্দিষ্টভাবে তিনি বলেন, সেনানিবাস থেকে ১১ মার্চ দুপুর আড়াইটায় এক বৈঠকে তাদের এই নয়া আওয়ামী লীগকে মেনে নিতে সমঝোতা ও সংসদের আসন ভাগাভাগির প্রস্তাব দেওয়া হয়। তার পোস্টের পর ওই রাতেই জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। সেখানে নেত্র নিউজের একজন প্রতিবেদক হাসনাত আব্দুল্লাহকে প্রশ্ন করেন, সেনানিবাসে তিনি যে বৈঠকটির কথা বলছেন, তা কি সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে হয়েছিল কি না। কিন্তু এই বিষয়ে তিনি সরাসরি জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানান। হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমিতো সেখানে ‘ক্যান্টনমেন্ট’ উল্লেখ করেছি, আপনারা কথা বলতে পারেন সেখানে। আরেকজন সাংবাদিক তাকে সরাসরি প্রশ্ন করেন কার উদ্যোগে বৈঠকটি হয়েছিল। উত্তরে হাসনাত বলেন, সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা ও বিদ্যমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তাদের মধ্যে নানা প্রশ্ন ছিল। এসব বিষয়ে ‘কথা বলার জন্য আমাদেরকে আহ্বান জানানো হয়েছিল।’ সংবাদ সম্মেলনের পর নেত্র নিউজের একজন প্রতিবেদক আবারও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি ‘বাইনারি’ বা হ্যাঁ-না জবাব দিতে রাজি হননি। নেত্র নিউজকে পাঠানো বিবৃতিতে সেনাসদর নিশ্চিত করেছে সেনাপ্রধানের সঙ্গেই ওই বৈঠকটি হয়েছিল। তবে ওই বৈঠক ছাত্রনেতাদের আগ্রহেই হয়েছিল বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। সেনাসদরের বিবৃতি উল্লেখ করে নেত্র নিউজের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সারজিস আলম দীর্ঘদিন যাবৎ সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য ইচ্ছা পোষণ করছিলেন। পরবর্তীতে সারজিস আলম ১১ মার্চ সেনাপ্রধানের মিলিটারি অ্যাডভাইজারকে ফোন দিয়ে সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় চান। এর প্রেক্ষিতে মিলিটারি অ্যাডভাইজার তাদের সেনাসদরে আসার জন্য বলেন। অতঃপর ১১ মার্চ দুপুরে সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহ সেনাসদরে না এসে সরাসরি সেনাভবনে সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করেন। পরবর্তীতে সেনাপ্রধান অফিস কার্যক্রম শেষ করে সেনা ভবনে এসে তাদের সঙ্গে দেখা করেন। নেত্র নিউজের প্রতিবেদেন বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে ছাত্রনেতাদের বৈঠকে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল, তা নেত্র নিউজ স্বতন্ত্রভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ ইউনিটের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা পৃথকভাবে নেত্র নিউজকে বলেছেন, ছাত্রনেতাদের আগ্রহ ও উদ্যোগেই ওই বৈঠকটি হয়েছিল। Related posts:৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপের ৭০৭ ইউপি নির্বাচন১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস শুরু : শিক্ষামন্ত্রী৪৩তম বিসিএস থেকে ২ হাজার ৬৪ জনকে নিয়োগ Post Views: ৫৩ SHARES জাতীয় বিষয়: