গৌরবময় স্বাধীনতা দিবস আজ অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৬, ২০২৫ আজ ২৬ মার্চ—৫৪তম মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস। বাঙালি জাতির হাজার বছরের বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিন থেকেই শুরু হয়েছিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত লড়াই। এরপর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়। গৌরবময় এই দিবসটি আজ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হবে। এ লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। রাজধানীসহ সারা দেশে আজ প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। পরে বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও রাষ্ট্রীয়ভাবে স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। দেশের সব বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোয় দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে। দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, শিশু পরিবার, বৃদ্ধাশ্রম, ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রসমূহে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দেশকে আরও উন্নত ও শক্তিশালী করতে এবং স্বাধীনতার পূর্ণ সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে অন্তর্বর্তী সরকার বদ্ধপরিকর। রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, জনমুখী ও টেকসই উন্নয়ন এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আসুন, এ মাহেন্দ্রক্ষণে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে দেশের উন্নয়ন, শান্তি এবং সমৃদ্ধির পথে কাজ করার শপথ গ্রহণ করি। রাষ্ট্রীয় নানা আয়োজনের পাশাপাশি মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও আলাদা কর্মসূচি নিয়েছে। দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বাণী দিয়েছেন প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতারাও। গতকাল এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। তার ঐতিহাসিক ঘোষণায় সেই মুহূর্তে দিশেহারা জাতি পেয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার অভয়মন্ত্র। একটি শোষণ, বঞ্চনাহীন, মানবিক সাম্যের উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এদেশের মানুষ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের পতনের পর এখন সুযোগ এসেছে বাংলাদেশের সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত করা এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সংহত করা। এটিই হচ্ছে স্বাধীনতার মূল চেতনা। এদিকে, মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বাণীতে তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় জীবনে এই দিনটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। ১৯৭১ সালের এই দিনে এ দেশের মুক্তিকামী আপামর জনতা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশমাতৃকাকে পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্ত করার লক্ষ্যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত হয় আমাদের চূড়ান্ত বিজয় এবং বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। এ কারণেই ২৬ মার্চ আমাদের জাতীয় জীবনে গৌরব ও অনুপ্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবে। অন্য এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাধীনতার সুরক্ষা ও গণতন্ত্রের পতাকাকে সমুন্নত রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। দিবসটি উপলক্ষে আজ নানামুখী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—ভোর ৬টায় কেন্দ্রীয়সহ সব দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন; জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ; সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতিহা পাঠ ও দোয়া। এ ছাড়া সারাদেশে জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসহ সব ইউনিট মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও অন্যান্য কর্মসূচির আয়োজন করবে এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো নিজ উদ্যোগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবে। স্বাধীনতা দিবসে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য জামায়াতের সব শাখা এবং দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের আগামী প্রজন্মের সুখময় ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, দুর্নীতি ও বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার লক্ষ্যে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। Related posts:৪৩ তম বিসিএস : ১৮১৪ জনের চাহিদা পাঠিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়৭ মার্চ জাতীয় দিবস ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়অফিসে যাওয়া-আসার পথে বিড়ম্বনায় ব্যাংকাররা Post Views: ৫৬ SHARES জাতীয় বিষয়: