সেন্ট মার্টিন নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই: পরিবেশ উপদেষ্টা অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ৪:৫৬ অপরাহ্ণ, জুন ২৩, ২০২৫ সেন্ট মার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণে একটি দীর্ঘমেয়াদি মাস্টারপ্ল্যানের চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সোমবার (২৩ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সেন্ট মার্টিনের প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরতে শুরু করেছে। দ্বীপটি নিয়ে একটি সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যানের চিন্তা চলছে। এ লক্ষ্যে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড থেকে একটি প্রকল্প নেয়ার প্রক্রিয়া এগোচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেন্ট মার্টিন নিয়ে কোনো শঙ্কার কারণ নেই। এই দ্বীপটিকে সুরক্ষা দিতে পারলে সব আশঙ্কা দূর হবে। দ্বীপটি রক্ষা করা আমাদের অগ্রাধিকার।’ পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, আগামী ২৫ জুন থেকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে পরিবেশ মেলা ও বৃক্ষমেলা শুরু হবে। পরিবেশ মেলা চলবে ২৫ থেকে ২৭ জুন এবং বৃক্ষমেলা চলবে ২৫ জুন থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তিনি জানান, ২৫ জুন আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস। অনুষ্ঠানে পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে অবদানের জন্য ‘জাতীয় পরিবেশ পদক ২০২৪’, ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ জাতীয় পুরস্কার ২০২৫’ ও ‘বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কার ২০২৪’ প্রদান করা হবে। এছাড়া সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের মধ্যে লভ্যাংশের চেক বিতরণ করা হবে। পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং বনসম্পদ উন্নয়নে সরকারের চলমান কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, ‘জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে এবারও বিশ্ব পরিবেশ দিবস, পরিবেশ মেলা, জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা আয়োজন করা হয়েছে।’ বিশ্ব পরিবেশ দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনই সময়’ এবং বৃক্ষরোপণ অভিযানের প্রতিপাদ্য ‘পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি’ উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, দেশব্যাপী ১০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চিত্রাঙ্কন, বিতর্ক, স্লোগান প্রতিযোগিতা, সেমিনারসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রম চলবে। জেলা-উপজেলায় বৃক্ষমেলা ও শিক্ষার্থীদের মাঝে চারা বিতরণ করা হবে। প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘মানবদেহে প্লাস্টিক প্রবেশ করে ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। তাই সরকার ১ জুন থেকে স্ট্র, স্টারার, কটন বাড নিষিদ্ধ করেছে এবং ১৭টি সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণে এনেছে।’ উল্লেখযোগ্য তথ্য দিয়ে তিনি জানান, নভেম্বর ২০২৪ থেকে জুন ২০২৫ পর্যন্ত ৪৩৪টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় ৮১৫টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ৬৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায় ও ২ লাখ ৩৩ হাজার কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া বনভূমি রক্ষায় আগস্ট ২০২৪ থেকে ১,৭১৭ একর জমি দখলমুক্ত করে বন বিভাগের আওতায় আনা হয়েছে। বেজার (BEZA) আওতায় থাকা ৪,১০৪ একর জমি পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় ১৯৯৫-৯৬ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ৪ লাখ ২৬ হাজার ৮৪২ হেক্টর ব্লক বাগান, ৭২ হাজার ৫৮১ কিলোমিটার স্ট্রিপ বাগান এবং ২০ কোটি ৬২ লাখ চারা রোপণ ও বিতরণ করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের আওতায় হাতি, শকুন, শাপলাপাতা মাছ, পরিযায়ী পাখি, হাঙর, ডলফিন, ঘড়িয়াল রক্ষায় কার্যক্রম চলছে। হালনাগাদ করা হয়েছে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন। মৌলভীবাজারের লাঠিটিলায় সাফারি পার্ক প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে এবং পূর্বাচলকে জীববৈচিত্র্য অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, বায়ু, শব্দ ও নদীদূষণ রোধে ১,০৬৩টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় ২,৪৯৯টি মামলায় ২৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা আদায় ও ৪৮১টি ইটভাটা বন্ধ করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম, অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান এবং বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। Related posts:অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক হলেন ১২ কর্মকর্তাদেশে করোনায় আরও ৪৭ মৃত্যু, শনাক্ত ২২১১ময়মনসিংহ ও সুনামগঞ্জের ডিসিকে বদলি Post Views: ২৪ SHARES জাতীয় বিষয়: