ইমরান খানের বহু রূপ News News Desk প্রকাশিত: ৫:২০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০১৯ আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ক্রিকেট সুপারস্টার থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা ইমরান খান, তার ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম বছরটি বেশ আলোড়নময়। তিনি এখন এমন একটি অবস্থানে পৌঁছেছেন যে অনেকেই ভেবেছিলেন, তিনি সেটা কখনই অর্জন করতে পারবেন না। রাজনীতির মাঠে দুই দশকের দীর্ঘ সংগ্রামের পর ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয় পান তিনি। ওই দুই দশকের বেশিরভাগ সময় তাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মুখে পড়তে হয়েছে। পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনী, যারা কিনা স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময় পাকিস্তানকে শাসন করেছে, তারা ইমরান খানের দল পিটিআই পার্টির স্বার্থে পর্দার আড়ালে হস্তক্ষেপ করছে; এমন অভিযোগ উপেক্ষা করে ইমরান খান নিজ অবস্থানে অবিচল ছিলেন। এই উপলব্ধি এবং পাকিস্তানের সামনে অগণিত চ্যালেঞ্জ থেকেই বোঝা যায় যে খানের ক্ষমতায় থাকা প্রথম বছরটি এতোটাও সহজ ছিল না। সমালোচকরা অভিযোগ করেন, তিনি বিশ্বের কাছে যে চেহারা উপস্থাপন করেন, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে তার রূপ একেবারেই আলাদা। তবে তিনি কী করেছেন? নির্বাচনী প্রচারণায় দুর্নীতি বিরোধী বক্তব্য সেইসঙ্গে নয়া পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেয়ার পাশাপাশি খান তার সমর্থকদের প্রায় ওবামার আদলে ‘তাবদিলি’ (পরিবর্তন) করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল দেশের ভারসাম্যহীন অর্থনীতিকে রক্ষা করা। প্রথম আট মাসের মধ্যে, তিনি দীর্ঘদিনের মিত্র সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং চীন সফর করেন। অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে ৯০০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা আনার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু এতেও সঙ্কট কাটেনি। প্রবৃদ্ধির গতি কমতেই থাকে। রূপির দাম কমে যায় এবং মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো এই প্রবৃদ্ধির হার দুই অংকে পৌঁছায়। অর্থনৈতিক সঙ্কট ক্রমশ বাড়তে থাকায় ইমরান খানের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি থেকে ইউ-টার্ন নেয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) অর্থ সহায়তা চাইবেন না বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে সেই প্রতিশ্রুতি থেকে তিনি সরে আসতে বাধ্য হন। জুলাইয়ে, আইএমএফের সাথে ৬০০ কোটি ডলার প্যাকেজের একটি চুক্তি হয়। দেশটিতে ১৯৮০-এর দশক থেকে এ পর্যন্ত এটি আইএমএফের ১৩তম অর্থ সহায়তার প্যাকেজ। ইউএস-ভিত্তিক অ্যালব্রাইট স্টোনব্রিজ গ্রুপের দক্ষিণ এশিয়ার বিশেষজ্ঞ উজায়ের ইউনুস বলেছেন, পিটিআই সরকারের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এর নীতিগত পরিকল্পনার অভাব। তিনি বলেন, তারা কর রাজস্বের খুব উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। তবে যে মুহূর্তে তারা এই লক্ষ্যগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হবে, তখন তাদের পুরো তাসের ঘর ধসে পড়বে। তবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বিবিসিকে বলেছেন যে সরকার আমাদের কাজ করছে। তিনি বলেন, অর্থনীতির বিভিন্ন জায়গায় আমাদের একটি নিবেদিতপ্রাণ দল কাজ করছে এবং আমরা মনে করি যে আগামী নির্বাচনগুলো দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে হবে। তিনি স্বীকার করেছেন যে এই অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যেও সরকার, পিটিআইয়ের মূল মধ্যবিত্ত ভোটার শ্রেণিকে কিছুটা স্বস্তি দিতে সক্ষম হয়েছে। বিবিসির একটি উর্দু বিশ্লেষণ অনুসারে, ইমরান খান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের করা ৩৪টি প্রতিশ্রুতির মধ্যে কেবল তিনটি অর্জন করতে পেরেছে। চৌধুরী একটি নতুন অর্জন হিসাবে নতুন ই-ভিসা ব্যবস্থা প্রণয়নের কথা উল্লেখ করেন। Related posts:মিয়ানমারে বিক্ষোভে পুলিশের গুলি, নিহত বেড়ে ১১১৪০ যুদ্ধবিমান দিয়ে ইরানের ২০ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা ইসরায়েলেরইউক্রেনে সামরিক বিমান বিধ্বস্তে নিহত ২২ Post Views: ২২১ SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: