লোম্বার্দিয়া হয়ে উঠেছে ইতালির ‘উহান’ অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ৬:০৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৩, ২০২০ অনলাইন ডেস্ক : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ঝড়ে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইতালির বিভাগীয় শহর লোম্বার্দিয়া। দেশটিতে করোনায় মোট মৃত্যুর মধ্যে ৬৩ শতাংশই লোম্বার্দিয়ায়। রোববার ইতালিতে করোনায় মারা গেছে ৬৫১ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫ হাজার ৪৭৬ জনে। এটাই এখন পর্যন্ত কোনো দেশের সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এর মধ্যে ইতালির ২১টি বিভাগীয় অঞ্চলের মধ্যে লোম্বার্দিয়া হয়ে উঠেছে ইতালির ‘উহান’। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ও শতশত লাশ সৎকারে ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। চীন থেকে দু’দফায় ৪১ জন চিকিৎসক এবং রোববার কিউবা থেকে ৫২ জনের আরেকটি চিকিৎসক দল লোম্বাদিয়ায় পৌঁছেছে। ২১টি বিভাগীয় অঞ্চল নিয়ে গঠিত ইতালীর লোকসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬ কোটি। এর মধ্যে দেশটির উত্তরাঞ্চলের শিল্পোন্নত ‘লোম্বার্দিয়া’য় বাস করেন এক কোটি ২ লাখ। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য যাচাই করে দেখা গেছে, চীনের উহানের মতো ইতালিতে প্রথম করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয় লোম্বার্দিয়ায়। বেরগামো, মিলান, ব্রেসিয়াসহ ১২টি উপশহর নিয়ে গঠিত লোম্বার্দিয়ায় এ পর্যন্ত মারা গেছে ৩ হাজার ৪৫৬ জন। আর পুরো ইতালীতে মারা গেছে ৫ হাজার ৪৭৬ জন। অর্থাৎ দেশটিতে মোট মৃত্যুর প্রায় ৬৩ শতাংশ লোম্বার্দিয়ায়। আক্রান্তের দিক দিয়েও প্রায় ৪৭ শতাংশ রোগী লোম্বার্দিয়ার। রোববার পর্যন্ত ইতালিতে মোট আক্রান্ত রোগী ৫৯ হাজার ১৩৮ জন। যার মধ্যে লোম্বার্দিয়ায় রয়েছেন ২৭ হাজার ২০৬ জন। এরপরেই রয়েছে ‘এমিলিয়া রোমানিয়া’। যেখানে মোট মৃতের সংখ্যা ৮১৬ জন এবং আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৫৫৫ জন। আরেক বিভাগীয় অঞ্চল ‘ভেনেতো’তে আক্রান্ত রোগী ৫ হাজার ১২২ জন এবং মারা গেছে ১৬৯ জন। ‘পিয়েমনতে’ অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৪২০ জন এবং মারা গেছে ২৮৩ জন। ‘মার্কে’ বিভাগীয় অঞ্চলে আক্রান্ত সংখ্যা ২ হাজার ৪২১ জন, মারা গেছে ১৮৪ জন। ‘তোসকানা’ অঞ্চলে আক্রান্ত ২ হাজার ২৭৭ জন, মারা গেছে ৯১ জন। ‘লিগুরিয়া’তে আক্রান্ত সংখ্যা ১ হাজার ৬৬৫ জন, মারা গেছে ১৭১ জন। ‘ট্রেনটিনো’ এলাকায় আক্রান্ত ১ হাজার ৬৩২ জন এবং মারা গেছে ৫৮ জন। রাজধানী রোমসহ ৫টি উপশহর নিয়ে গঠিত ‘লাসিও’তে আক্রান্ত সংখ্যা ১ হাজার ৩৮৩ জন এবং মারা গেছেন ৫৩ জন। ‘কাম্পানিয়া’তে মোট আক্রান্ত ৯৩৬ জন, মারা গেছে ২৯ জন। ‘ফ্রিউলি’তে আক্রান্ত ৮৭৪ জন, মারা গেছে ৩১ জন। ‘সিসিলিয়া’তে আক্রান্ত সংখ্যা ৬৩০ জন, মারা গেছে ৮ জন। ‘আবরুচ্চো’তে আক্রান্ত ৫৮৭ জন, মারা গেছে ৩৩ জন। ‘ইমব্রিয়া’তে আক্রান্ত ৫২১ জন, মারা গেছে ১৬ জন। ‘ভাল্লে ডি আওসতা’তে আক্রান্ত ৩৬৪ জন, মারা গেছে ৯ জন। ‘সার্দেনিয়া’তে আক্রান্ত ৩৩৯ জন, মারা গেছে ৭ জন। ‘কালাব্রিয়া’তে আক্রান্ত ২৭৩ জন, মারা গেছে ৮ জন। ‘মলিসে’ এলাকায় আক্রান্ত ৬৬ জন, মারা গেছে ৭ জন। এছাড়া একমাত্র এলাকা ‘বাসিলিকাতা’ যেখানে কেউ মারা যায়নি, তবে আক্রান্ত সংখ্যা ৮১ জন। করোনার অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর লোম্বাদিয়া অঞ্চলকেই প্রথমে লকডাউন করে দেওয়া হয়েছিল। ঘরে থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল লোম্বার্দিয়াসহ পাশ্ববর্তী এলাকার এক কোটি ৬০ লাখ মানুষকে। এর দু’দিনের মধ্যে পুরো ইতালি রেড জোনের আওতাভুক্ত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ততোদিন দেরি হয়ে যায়। এরই মধ্যে জনগণের মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এখন পর্যন্ত অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। এরই মধ্যে চীন থেকে দু’দফায় ৪১ জন এবং রোববার কিউবা থেকে ৫২ জনের একটি চিকিৎসক বিশেষ বিমানযোগে লোম্বাদিয়ায় পৌঁছেছে। স্থানীয় করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সহায়তা দিতে তারা ইতালিয়ান চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কাজ করবেন। Related posts:ক্ষমতায় যাওয়ার পথ সুগম করতেই প্রিন্স ফয়সালকে গ্রেফতার?ভারতে তাণ্ডব চালাচ্ছে পঙ্গপাল, ভীতিকর দৃশ্য ভিডিওতেমার্কিন বিমানবাহী রণতরীতে অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, আহত ২২ Post Views: ২৭৫ SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: