শেরপুরে দুর্বৃত্ত চক্রের কবলে আইনজীবী ॥ গ্রেফতার ১

প্রকাশিত: ১০:৩৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেরপুরে এক দুর্বৃত্ত চক্রের পুনঃপুন হুমকি ও হামলায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এক আইনজীবী পরিবার। ঘটনাটি সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের হেরুয়া তালুকপাড়া গ্রামের। ওই ঘটনায় ২০ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুরের আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুতবিচার) আদালতে ২১ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী আইনজীবী ও জেলা মৎস্যজীবী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এরশাদ আলী লিটন। অন্যদিকে একইদিন দুপুরে একাধিক দফার ওই ঘটনায় রাশেদুল হাসান রিটু (৩২) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিকেলে গ্রেফতারকৃত রিটুকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এদিকে ওইসব ঘটনায় এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। দ্রুত পরিস্থিতির সামাল না দিতে পারলে যেকোন সময় বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এরশাদ আলী লিটন নিজ এলাকায় বিবদমান দুপক্ষের মধ্যে সম্প্রতি বাদীপক্ষের একটি মামলা পরিচালনা করায় তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয় ওই মামলার আসামিপক্ষের লোকজন। এক পর্যায়ে তারা বাদীপক্ষে ওই মামলা পরিচালনা না করার জন্য ওই আইনজীবীকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে। তাদের অবাধ্য হলে গত ১৬ আগস্ট ওই আইনজীবীকে এলাকায় পেয়ে তার উপর হামলা চালিয়ে হত্যা চেষ্টা করে। ওই ঘটনায় স্থানীয় রাশেদুল হাসান খান রিটুসহ ১৩ জনকে স্বনামে ও আরও অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামি করে আদালতে একটি নালিশী মামলা দায়ের করলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবীর তা নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয় প্রতিপক্ষের লোকজন। এক পর্যায়ে তারা ১৯ আগস্ট আইনজীবী লিটনের বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে। আর ওই ঘটনায় আইনজীবী লিটন তার সহোদর বড়ভাই এডভোকেট মঞ্জুরুল ইসলাম শাহীন এপিপিসহ নিজের সহকর্মীদের নিয়ে আদালতে যখন দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়েরের জন্য ব্যস্ত ছিলেন, ঠিক তখন তাদের বাড়িতে আবারও হামলার চেষ্টা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই আইনজীবীকে হত্যা চেষ্টা মামলায় রাশেদুল হাসান রিটুকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত রিটু দ্রুত বিচার আইনের মামলাতেও প্রধান আসামি। এছাড়া ওই আইনজীবীর বাদীপক্ষে পরিচালনা করা মামলাতেও রিটু গ্রেফতার হয়ে হাজতবাস করেছে।
এদিকে মৎস্যজীবী লীগ নেতা এরশাদ আলী লিটনের উপর দুর্বৃত্তদের পুনঃপুন হামলা ও হুমকির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি ডাঃ আব্দুস সালাম ও সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন। সেইসাথে তারা ওই ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার দাবি করেছেন।
এ ব্যাপারে হামলার শিকার আইনজীবীর বড়ভাই এডভোকেট মঞ্জুরুল ইসলাম শাহীন এপিপি বলেন, কারও পক্ষে মামলা পরিচালনা করা অন্যায় নয়। বরং সেটা কোন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্যের অংশ। তারপরও আমার ছোটভাইসহ আমাদের খোদ পরিবারটিই এখন স্থানীয় দুর্বৃত্ত চক্রের চরম রোষানলে রয়েছি। তবে আমরা সবসময়ই শান্তির পক্ষে। শিক্ষক দম্পতি বৃদ্ধ বাবা-মা আর এলাকার নিরীহ লোকজনকে নিয়ে যেন আমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারি সেজন্য যেকোন দায়িত্বশীল মহলের উদ্যোগ ও সহযোগিতায় আমরা সাড়া দিতেও প্রস্তুত রয়েছি।