শেরপুরে মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়ার হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি

প্রকাশিত: ৮:৩৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৮, ২০২৪

শেরপুরে লছমনপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার এংরাজ আলী ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে মাদ্রাসায় হামলা ও মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়ার হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৮ অক্টোবর সোমবার দুপুরে লসমনপুর ইউনিয়নের জামতলা বাজারে ওই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় ফারাজিয়া আল আরাবিয়া কওমী মাদ্রাসা ও ফারাজিয়া এতিমখানার শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সহশ্রাধিক স্থানীয় সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমান উপস্থিত ছিলেন।

মাস খানেক ধরে এলাকাবাসি, ওলামা মাশায়েখ ও লছমনপুর মুর্শিদপুর দরবার শরীফের পীর মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা হায়দার ওরফে দোজা পীরের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে। এক পক্ষের দাবী কথিত পীরের দরবারে অইসলামিক কর্মকান্ড হয়। পীরের পায়ে সেজদা, গাজা খাওয়া ও নারী পুরুষরা বেপর্দায় চলে। ওরসের নামে বিশ্বাসী মানুষজনদের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে। এসব বন্ধ করতে হবে। অপর পক্ষের দাবী হাদিস কোরান মতেই আমরা চলি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও খোদার নামে জিকির হয়।পীর বিদ্বেষী কিছু মানুষজন উত্তেজনা ছড়াচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৫ অক্টোবর শুক্রবার সকালে স্থানীয় এংরাজ মেম্বার সহ কয়েকজন মাদ্রাসায় প্রবেশ করে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এংরেজ পীর ভক্ত ও পীরের কাছ থেকে কন্টাক নিয়ে মাদ্রাসা উচ্ছেদ করতে মাদ্রাসায় তালা দেয়ার হুমকি দেয়। এর ফলে প্রায় ভয়ে মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো. তরিকুল ইসলাম ২৭ অক্টোবর শেরপুর সদর থানায় সাধারণ ডায়রি করেন।
ওই ঘটনার জের ধরে আবার হুমকি দিলে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ ধর্মপ্রাণ স্থানীয়রা।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা মো. তরিকুল ইসলাম, মাওলানা মো. খোরশেদ আলম, মাওলানা মো. আবুল কাশেম, ইব্রাহিম খলিল, শহিদুল ইসলাম, মাওলানা মো. গোলাম রব্বানী, মো. হাফেজ মিয়া প্রমুখ।
বক্তব্যে মাওলানা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন,ধর্মের নামে প্রতারণা করে দোজা পীর এই এলাকায় অজস্র সম্পদ তৈরি করেছে। এখানে শিল্প কারখানা, কৃষি খামার সহ উন্নয়ন প্রকল্প করলে আমরা তাকে সহযোগিতা করবো। কিন্তু ধর্মের নামে কুফরী কর্মকান্ড, মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করবে এটা তৌহিদি জনতা মেনে নেবে না। আমরা কোন ধরনের সহিংসতার পক্ষে নই। শুধু ধর্মের নামে ব্যবসা বন্ধ করতে হবে।
এদিকে বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ হবার ঘন্টা দুয়েক পর দোজা পীরের স্থানীয় প্রতিনিধি এংরাজ মেম্বারের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ওই মাদ্রাসা ও এলাকাবাসি কয়েকজনের নামে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, ঘরের দুইটি কক্ষের মেঝেতে দুইটি লেপ ও তোষকে আগুন পাওয়া গেছে। এঘটনায় শেরপুর ফায়ার সার্ভিসের ওয়ার হাউস ইন্সপেক্টর নাসিম উদ্দিন সহ একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে লেপ তোশকের আগুন নেভায়। তবে বাকি সকল আসবাবপত্র অক্ষত অবস্থায় আছে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন মেম্বার বাড়ীর লোকজন।
আশেপাশের লোকজন বলেছেন, দিনে দুপুরে আগুন দেওয়া বিষয়টি দেখেননি। পীর ভক্তরা বলেছেন ভক্তদের আতংতিক করতেই এংরেজ মেম্বারের বাড়ীতে আগুন দেওয়া হয়েছে। দোজা পীর আপাতত দরবার শরীফে অবস্থান করছেন না তবে দরবার শরীফ নিয়ে পীর ভক্তকুল আতংকে আছেন বলে জানিয়েছেন।