শেরপুরে হাসপাতালের সাত তলা থেকে শিশুকে ছুঁড়ে ফেলার হুমকি নার্সের

প্রকাশিত: ৯:৩৩ অপরাহ্ণ, মে ২৯, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : অসুস্থতাজনিত কারণে বেশি কান্নাকাটি করায় লাবেল হাসান নামে চার মাস বয়সী এক শিশুকে হাসপাতালের সাত তলা থেকে প্রকাশ্যে ছুঁড়ে ফেলার হুমকি দিয়েছেন শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স আছমা বেগম। ২৮ মে শুক্রবার সন্ধ্যায় শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই শিশু শহরের মোবারকপুর মহল্লার মোহর উদ্দিনের ছেলে।
শিশুটির মা চম্পা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ঠাণ্ডাজনিত রোগের কারণে গত ২৬ মে বুধবার রাতে তার শিশু সন্তান লাবেল হাসানকে জেলা সদর হাসপাতালের ৭ম তলার শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করান। এরপর থেকে সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় হঠাৎ করে শিশু লাবেল হাসান বেশি কান্নাকাটি শুরু করে। তখন নার্স আছমা বেগমের কাছে গেলে তিনি একটা ঔষধ (উইন্ডল প্লাস) বাইরে থেকে কিনতে পাঠান। পরে বাইরে থেকে ওই ঔষধ কিনে নার্স আছমা বেগমকে দিলে সেটা নিয়ে হাতে তার সময় নেই বলে এক ঘণ্টা কালক্ষেপণ করেন।
এদিকে শিশুটির কান্নাকাটি বাড়তে থাকলে ছেলের কষ্ট সইতে না পেরে চম্পা বেগম পর পর কয়েকবার ওই নার্সকে ডাকার পর সে হঠাৎ রাগান্বিত হয়ে এক পর্যায়ে শিশু লাবেলকে ঔষধ না দিয়ে সাত তলা থেকে ছুঁড়ে ফেলার হুমকি দেয়। ওইসময় লাবেলের বাবা মোহর উদ্দিনসহ ওয়ার্ডের অন্যান্য শিশুর অভিভাবকরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং কেউ কেউ নার্সদের গালিগালাজ শুরু করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে নার্স আছমা বেগম ডিউটি থাকাকালীন সময়েই কৌশলে ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যান। পাশের বেডে চিকিৎসাধীন থাকা এক শিশুর অভিভাবক হামিদ মিয়া বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। হাসপাতালে যারা চিকিৎসা নিতে আসেন, তারা ডাক্তার-নার্সদের উপর ভরসা করেন। ওই এমন কাজ করা মোটেও ঠিক হয়নি।
ঘটনার পর সিনিয়র নার্স আছমা বেগমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ডিউটিতে থাকা আরেক সিনিয়র স্টাফ নার্স রুবিয়া বেগম বলেন, যখন এমন ঘটনা ঘটেছে তখন আমি ছিলাম না। পরে এসে শুনতে পেলাম এমন একটা ঘটনা ঘটেছে। আমি তাৎক্ষণিকভাবে শিশুটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি। এরপর শিশুটির কান্নাও বন্ধ হয়েছে।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. খাইরুল কবির সুমন বলেন, বিষয়টির ব্যাপারে আমিও অবগত আছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তে ওই নার্সের গাফিলতি প্রমাণিত হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. একেএম আনওয়ারুর রউফ বলেন, হাসপাতালের কোন নার্স যদি এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।