শেরপুরে বার-প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতির চেম্বারে জরিমানাকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত সমস্যার সমাধান

প্রকাশিত: ৪:১৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৬, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : শেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধারের চেম্বারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ও জরিমানাকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান হয়েছে। ২৬ জুলাই সোমবার সকালে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোমিনুর রশীদের আহবানে ও সভাপতিত্বে তার সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক বিশেষ সভায় বার ও প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা ও কতিপয় সিদ্ধান্তের আলোকে ওই সমস্যার সমাধান হয়।
সভায় সাংবাদিক-আইনজীবী নেতা রফিকুল ইসলাম আধার ওই ঘটনা তুলে ধরে তা কিছুদিন আগে সদর ভূমি অফিসের সেবা নিয়ে নিজের ফেসবুক ওয়ালে দেওয়া এক স্ট্যাটাসের প্রতিহিংসায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। ওই প্রেক্ষিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোমিনুর রশীদ বলেন, চলমান করোনা ভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে প্রশাসনসহ অন্যান্য বিভাগের পাশাপাশি আইনজীবী ও সাংবাদিকরাও ফ্রন্টলাইনে থেকে কাজ করছেন। জেলা প্রশাসনের নানা কর্মকাণ্ডেও তাদের রয়েছে আন্তরিক সহযোগিতা। কিন্তু লকডাউন কার্যকরে ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মিডিয়া অফিস ও ল’ চেম্বারে অভিযান পরিচালনা ও ন্যূনতম হলেও জরিমানার বিষয়টি দুঃখজনক। এজন্য আমরা নিজেরাও ব্যথিত এবং ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে তাকে শহরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ফরগিভ এন্ড ফরগেট’। তিনি ওই জরিমানার বিষয়ে বলেন, দিস ইজ ফার্স্ট এ্যান্ড দিস ইজ লাস্ট।’ তদুপরি একটি আবেদন সাপেক্ষে বিষয়টি সম্মানজনকভাবে দ্রুত নিস্পত্তি করা হবে। এছাড়া সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রক্ষায় বিচার বিভাগের নির্দেশনায় আদালতের সীমিত কার্যক্রমে অংশ নিতে স্থানীয় আইনজীবীদের ল’ চেম্বারগুলো খোলা রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, বিচার বিভাগের নির্দেশনার আলোকেই চেম্বারগুলো খোলা থাকবে এবং সেখানে চলমান অবস্থায় আর কোন অভিযান পরিচালনা হবে না। তবে সেখানে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের উপর বা মেনে চলার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শেরপুরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) এটিএম জিয়াউল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুকতাদিরুল আহমেদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফিরোজ আল মামুন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট মোখলেসুর রহমান আকন্দ, সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম ভাসানী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও অতিরিক্ত পিপি এ্যাডভোকেট ইমাম হোসেন ঠান্ডু, প্রেসক্লাবের সভাপতি শরিফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মেরাজ উদ্দিন, শেরপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মানিক দত্ত, সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল, সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা তালাপতুফ হোসেন মঞ্জু প্রমুখ। ওইসময় আইনজীবী সমিতি ও প্রেসক্লাবের আরও কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, রবিবার দুপুরে শহরের বটতলা কালিরবাজারস্থ রফিকুল ইসলাম আধারের পরিচালনাধীন সিটি মিডিয়া সেন্টার ও ল’ চেম্বারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) তনিমা আফ্রাদের নেতৃত্বে চেম্বার খোলা রাখার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়। ওইসময় রফিকুল ইসলাম আধার বিচার বিভাগের নির্দেশনার আলোকে যৌক্তিক প্রতিবাদ করা সত্ত্বেও তার জুনিয়র এ্যাডভোকেট তাজুমুল ইসলামকে ২শ টাকা জরিমানা করেন তনিমা আফ্রাদ। বিষয়টি তিনি নিজের ফেসবুক পেইজে তুলে ধরে আইনি লড়ার ঘোষণা দিলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। প্রতিবাদে ফুঁসে উঠে আইনজীবী-সাংবাদিকসহ সচেতন অনেকেই। ওই প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের তরফ থেকে নেওয়া হয় সমঝোতা উদ্যোগ।