স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২৪ ঘন্টার মধ্যে সমস্যার সমাধান না করা হলে পন্য পরিবহনের সকল যানবাহন বন্ধ করে দেয়াসহ বেসিক ট্রেড ফেডারেশণ ভূক্ত ২৪টি শ্রমিক সংগঠন তাদের কর্মবিরতি শুরু করে আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেরপুরে জেলা বেসিক ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমিক ফেডারেশন ও জেলা ট্রাক মিনিট্রাক ড্রামট্রাক ট্যাংকলড়ী-কভার্ডভ্যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। ২৯ আগস্ট রাতে পৌর ট্রাক টার্মিনালে যৌথ উদ্যোগে এক জরুরি সভায় ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সসম্পাদক, জেলা বেসিক ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমিক ফেডারেশন ও জেলা ট্রাক মিনিট্রাক ড্রামট্রাক ট্যাংকলড়ী-কভার্ডভ্যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ আরিফ রেজা।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে শ্রমিক নেতা আরিফ রেজা বলেন, গত ২০-০৯-২০১৯ ইং তারিখে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে শেরপুর জেলা ট্রাক, মিনিট্রাক ড্রামট্রাক, ট্যাংকলড়ী ও কভার্ডভ্যান চালক শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিস্ট্রেশন নম্বর: ঢাকা-৩২৭৭) এর ৮ম ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আমিসহ নির্বাচনে জয়ী নেতৃবৃন্দদের নিয়ে আমরা মালিক সমিতির সাথে মিলে-মিশে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। কিন্তু নির্বাচনে হেরে গিয়ে পরাজিত ২/৩ জন প্রার্থী স্বল্প সংখ্যাক শ্রমিক নিয়ে নিয়ম বহির্ভূত ও অবৈধ ভাবে শেরপুরে বাংলাদেশ আন্তঃজেলা ট্রাক চালক শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং- ১৬৬৫) নামে একটি সংগঠনের কার্যক্রম শুরু করেছে। নিয়ম অনুযায়ী এই সংগঠনটি (১৬৬৫) ঢাকা মহানগরের বাহিরে কোন কমিটি গঠন বা তাদের কোন কার্যক্রম পরিচালিত করতে পারবে না। এ নিয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে নানাভাবে অভিযোগ দিয়েও কোন ফল পাচ্ছিনা। সাধারণ শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের লক্ষে জেলা ট্রাক মিনিট্রাক ড্রামট্রাক ট্যাংকলড়ী-কভার্ডভ্যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে একাদিকবার অবরোধ কর্মসূচী পালন করলেও প্রশাসন আমাদের সমস্যা সমাধান করবে, এ আশ্বাস দেয়ায় শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওই অবৈধ সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধসহ আহত শ্রমিকদের বিষয়ে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এ নিয়ে তিনি ক্ষোভ জানান।

এ নিয়ে ক্ষোভ বাড়তে থাকে জেলা ট্রাক মিনিট্রাক ড্রামট্রাক ট্যাংকলড়ী-কভার্ডভ্যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের মধ্যে। তাই পরবর্তী করনীয় ঠিক করতে ২৯ আগষ্ট রাতে জেলা বেসিক ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমিক ফেডারেশন ও জেলা ট্রাক মিনিট্রাক ড্রামট্রাক ট্যাংকলড়ী-কভার্ডভ্যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে এক জরুরি সভা করে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি আলহাজ্ব দুলাল মিয়া বলেন, শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পরবে জেলার ব্যবসায়ী মহল। ব্যবসায়ীবৃন্দ এ সমস্যার দ্রুত সমাধান চান। রেজিঃ নং ৩২৭৭ এ জেলার সর্বপ্রথম ট্রাক চালকদের সংগঠন, তারা দীর্ঘদিন যাবত ট্রাক মালিক সমিতির সাথে মিলে-মিশে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তাই এ সংগঠনকে অবৈধ বলার সুযোগ নেই। নির্বাচনে হেরে গিয়ে অবৈধ সংগঠনের রেজিঃ নং নিয়ে এসে যারা বিশৃঙ্খলা করছে সবাই মিলে তাদেকে প্রতিহত করতে হবে। ওইসময় তিনি প্রশাসনের কাছে দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করার জন্য আহ্বান জানান। এছাড়া সভায় শেরপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মেরাজ উদ্দিন গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।

সভায় জেলা বেসিক ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, জেলা ট্রাক মিনিট্রাক ড্রামট্রাক ট্যাংকলড়ী-কভার্ডভ্যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক হোসেন আলী, উপদেষ্টা রুকনুজ্জামান রঞ্জু, বাংলাদেশ সংযুক্ত ট্রাক বন্দোবস্তুকারী শ্রমিক ফেডারেশন শেরপুর জেলা শাখার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলামসহ শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন জেলা ট্রাক মিনিট্রাক ড্রামট্রাক ট্যাংকলড়ী-কভার্ডভ্যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক আঃ হামিদ।
সভাশেষে সভাপতি আরিফ রেজা আন্দোলন কর্মসূচী ঘোষনা করে বলেন, জেলা প্রশাসনসহ সরকারের দায়িত্বশীল দপ্তরগুলো আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে অবৈধ শ্রমিক সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ ও আমাদের আহত শ্রমিকদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতার করা না হলে আগামী মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে পন্য পরিবহন বন্ধসহ সকল শ্রমিক তাদের কর্মবিরতিসহ কঠোর আন্দোলন শুরু করা হবে। আর আমাদের দাবী আদায় হওয়ার সাথে সাথে আমরা আমাদের কাজে যোগদান করবো।
সভায় জেলা বেসিক ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আঃ রহমানের সুস্থতা কামনায় দোয়া করা হয়।