নালিতাবাড়ীতে খিচুড়ি নিয়ে ‘শিশুদের দ্বন্দ্বে’ ছোট বোনের স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ৩:৪২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩১, ২০২১

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে খিচুড়ি নিয়ে শিশুদের তর্কাতর্কির জেরে ছোট বোনের স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মো. সোলায়মান নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। উপজেলার বাঘবেড় বালুরচর গ্রামের রাস্তায় ৩০ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় সোলায়মানের ভগ্নিপতি রুমান মিয়াকে। তার বাড়ি ওই গ্রামেই।

রুমানের ছোট ভাই মো. ভাষানী বলেন, ‘বাঘবেড় এলাকায় শুক্রবার রাতে ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুস সবুরের নির্বাচনি প্রচার শেষে খিচুড়ি বিতরণ করা হয়। সেই খিচুড়ি আমার স্ত্রী ফ্রিজে রেখে দেয়। পরদিন বিকেলে আমার ছয় বছরের মেয়ে বর্ষাকে সেটা খেতে দেয়। আমার মেয়ে ওই খিচুড়ি নিয়ে পাশের মানিক মিয়ার বাড়িতে যায়। মানিকের তিন বছরের ছেলে মমিন ধাক্কা দিলে খিচুড়ি পড়ে যায় মেয়ের হাত থেকে।
‘এটা নিয়ে শিশুরা ঝগড়া করতে থাকে। তাদের ঝগড়ায় ঢুকে মানিকের ভাতিজা সোলায়মান আমার বাবা মো. আজিজুলকে আঘাত করে। এর প্রতিবাদ করতে গেলে আমার আর আমার ভাই রুমানের সঙ্গে সোলায়মান ঝগড়া করেন।’

ভাষানী জানান, খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম মস্তুফা লোক পাঠিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। পরে রাতেই সোলায়মান রুমানকে কুপিয়ে পালিয়ে যান।
বাঘবেড় ইউপির সদস্য গোলাম মস্তুফা বলেন, ‘স্থানীয়রা আমার কাছে ফোন দেয়। আমি আমার ছেলে আর ভাতিজাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছিলাম। রোববার ঝগড়ার বিষয়টি মিমাংসার কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। রোববার সকালে আবার বিষয়টি নিয়ে আমরা বসতাম। এর মধ্যেই রুমানকে মেরে ফেলা হলো।’
রুমানের বাবা মো. আজিজুল হক বলেন, ‘শনিবার রাতে আমার ছেলে রুমান তার মোটরসাইকেল নিয়ে বাঘবেড় বাজারের দিকে যাচ্ছিল। আগে থেকেই সোলায়মান ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাঘবেড় বালুরচর মসজিদের কাছে অবস্থান করছিল। সেখানে আমার ছেলের মোটরসাইকেল রাস্তায় আটকে ও তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে রেখে যায়। পথচারীরা টের পেয়ে আমার ছেলেকে নালিতাবাড়ী হাসপাতালে নিলে ডাক্তার বলেছেন সে মারা গেছে।’

নিহতের স্ত্রী রীতা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীরে যারা মাইরা ফেলছে তাগো আমি শাস্তি চাই। আমার দেড় মাসের ছেলেডা এতিম হয়ে গেল।’
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল জানান, রুমানের বাবা আজিজুল হক সকালে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।