মোবাইল চুরির অপবাদে কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১০:২৯ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯ শ্যামলী নিউজ ডেস্ক : মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে এক দরিদ্র কিশোরকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে নারিকেল গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই ভাইকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পশ্চিম রাজনগর বন্ধুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গ্রেফতাররা হলেন- ওই গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে ইসহাক মিয়া (৩০) ও রবিউল মিয়া (২০)। গ্রেফতার দুই ভাইকে গতকাল মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাতদিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। আদালতের বিচারিক হাকিম মোহসিনা হোসেন তুশি আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর (রোববার) রিমান্ড শুনানির তারিখ ধার্য করে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এদিকে নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে গত তিনদিন যাবত নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে ওই কিশোর। অন্যদিকে নির্যাতনের ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর (রোববার) নালিতাবাড়ীর পশ্চিম রাজনগর বন্ধুপাড়া গ্রামের আলী হোসেনের বাড়ি থেকে একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। এ ঘটনায় আলী হোসেনের বাড়ির লোকজন একই গ্রামের নানাবাড়িতে থাকা ওই কিশোরকে সন্দেহ করে। এমনকি ওইদিন তাকে গ্রামের একটি রাস্তা থেকে ধরে পরনের লুঙ্গি খুলে কাঁধে ঝুলিয়ে টেনেহিঁচড়ে আলী হোসেনের ভাই আব্দুস সালামের বাড়িতে নিয়ে যায় সালামের দুই ছেলে ইসহাক ও রবিউলসহ অন্যরা। পরে তাকে ওই বাড়ির নারিকেল গাছে পেছনে হাতমোড়া দিয়ে রশিতে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে ওই কিশোর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে খবর পেয়ে কিশোরের নানাবাড়ির লোকজন অনেক অনুনয়-বিনয় করে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ নির্যাতনের ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে এবং পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করে। কিশোরকে মোবাইল চুরির অপবাদে শারীরিক নির্যাতনের বিষয়টি জানতে পেয়ে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন কিশোরকে দেখতে যান এবং তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার কিশোরের নানা বাদী করে নালিতাবাড়ী থানায় আলী হোসেন, ইসহাক মিয়া ও রবিউলর মিয়ার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের বিরুদ্ধে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে ইসহাক ও রবিউলকে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বশির আহমেদ বাদল জানান, মোবাইল চুরির সন্দেহে গাছে বেঁধে কিশোরকে নির্যাতনের ঘটনায় থানায় নিয়মিত মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এজাহার নামীয় দুইজনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ভিডিও ক্লিপ দেখে অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জহুরুল হক জানান, নির্যাতনের শিকার কিশোরের বাবা ও মায়ের মধ্যে ছাড়ছাড়ি হয়ে গেছে। বর্তমানে কিশোরটির মা ঢাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করেন। বাবাও তার কোনো খোঁজ করেন না। তাই কিশোরটি তার দরিদ্র নানার আশ্রয়ে থাকে। Related posts:নড়াইলে প্রতিপক্ষের হামলায় দুই ভাই নিহত, আহত ৫আবাসিক হোটেলে গোপন বৈঠকের অভিযোগে আওয়ামীপন্থি ১৯ ইউপি সদস্য আটকনারীদের সম্মান বৃদ্ধি করেছেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা : মির্জা আজম Post Views: ৩৯১ SHARES নির্যাতন বিষয়: