ঝিনাইগাতীর গারো পাহাড়ে বাঘ!, আতঙ্কে স্থানীয়রা

প্রকাশিত: ৭:৩৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৫, ২০২২

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী শেরপুরের ঝিনাইগাতীর গারোপাহাড়ে বাঘ আতঙ্ক দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। বাঘ আতঙ্কে বনে গবাদিপশু চরানো বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয়রা। এ এলাকাগুলো হচ্ছে বাকাকুড়া নয়াপাড়া, হালচাটি, উত্তর গান্ধিগাঁও ও ছোটগজনী।

এলাকাবাসী জানান, গেলো ১৫ দিন ধরে গারোপাহাড়ের পার্শ্ববর্তী বাকাকুড়া এলাকার একটি কালভার্টের ভেতরে একটি বাঘ জাতীয় প্রাণি বাস করছে। এ সময়ে বাঘটির আক্রমণের শিকার হয়েছে ১৯টি গবাদি পশু। তাই বাঘ আতঙ্কে বন এলাকায় গবাদিপশু চরাতে ভয় পাচ্ছেন স্থানীয়রা।
সম্প্রতি বাকাকুড়া গ্রামের কৃষক মনজর আলীর গরুটি বাঘের আক্রমণে ব্যাপকভাবে আহত হয়। শুধু মনজর আলীই নন, বাকাকুড়া এলাকার প্রায় পনেরো জন কৃষকের ১৯টি গরু ছাগল বাঘের আক্রমণের শিকার হয়েছে বলে দাবী স্থানীয়দের। তারা বলেন, বাকাকুড়া গজনী সীমান্তে একটি ছোট কালভার্টের ভেতরে এই বাঘটি বাস করে। দিনের বেলায় খাবারের খোঁজে লোকালয়ে এবং বনের সবুজ মাঠে চরাতে দেয়া গবাদি পশুকে আক্রমণ করছে। তাদের দাবী, ইতোমধ্যে বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ১৫টি ছাগলের।
এদিকে বন বিভাগের দায়িত্বরত প্রহরীরাও বাঘ সদৃশ্য কোন প্রাণির বিচরণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন বিভাগের এক প্রহরী বলেন,আমরা ডিউটি করার সময় কয়েকবার প্রাণিটি দেখেছি। প্রাণিটি কুকুর বা শেয়ালের চেয়ে আকারে বড়। মেছো বাঘের চেয়েও আকারে কিছুটা বড়। তবে বাঘ কিনা এ বিষয়টি নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।
স্থানীয় আলম মিয়া, ঠান্ডু মিয়া, হামিদুর, সবুজ মিয়া ও সাইবরের ছাগলের মৃত্যু হয়েছে বাঘের আক্রমণে। তাদের দাবি, বিকেলের কোন এক সময় মাঠে তাদের ছাগলের উপর আক্রমণ করে বাঘটি। পরে তাদের ছাগলের মৃত দেহাবশেষ পায় এলাকাবাসী।
স্থানীয় নুর জালাল বলেন, আমি রাতের বেলায় প্রাণিটি দেখেছি। মেছো বাঘের চেয়ে বড়, তবে অন্ধকার হওয়ায় গায়ে ডোরাকাঁটা আছে কিনা, বুঝতে পারিনি। আলম মিয়া বলেন, মেছো বাঘ হলে এভাবে গরু ছাগলের উপর আক্রমণ করতো না। এলাকার অনেকেই দেখছে। এইটা নিশ্চিত হওয়া দরকার। নইলে একটা গরু ছাগলও টিকানো যাবে না।
শেরপুরের বন্যপ্রাণি ও জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকার বলেন, এলাকাবাসী বাঘের বিষয়টি বন বিভাগের স্থানীয় বিট অফিস ও রেঞ্জ অফিসে জানিয়েছে। তবে প্রাণিটি আদৌ বাঘ কিনা বা বাঘ হলেও কোন প্রজাতির সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। আমরা বাঘটি চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।
ময়মনসিংহ বন বিভাগের সহকারি বন সংরক্ষক আবু ইউসুফ বলেন, আমাদের সীমান্তে যেহেতু ঘন বন রয়েছে, এটি যেকোন বন্যপ্রাণির জন্য নিরাপদ আবাসস্থল। তবে প্রাণিটি বাঘ কিনা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আমাদের কর্মকর্তারা কাজ করছেন। চিহ্নিত করা সম্ভব হলে আমরা বাঘটির সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে বদ্ধপরিকর।