শেরপুরে ইদ্রিস গ্রুপের পরিচালকের বিয়ের দাওয়াতি মেহমান হলেন কোম্পানীর ৪হাজার শ্রমিক!

প্রকাশিত: ৫:০২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৪, ২০২৩

শুধু জমকালো সঙ্গীতানুষ্ঠান ও রিসিপশনই নয় শেরপুরের ইদ্রিস গ্রুপের পরিচালকের বিয়ের এবারের পর্বে দাওয়াতি মেহমান হিসেবে এসেছে তাদের কোম্পানীরই চার হাজার শ্রমিক। সবাই এসেছে পরিবার নিয়ে, নেই কোন ভেদাভেদ। প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে বুড়ো মিলে দাওয়াতে এসেছে প্রায় দশ হাজার মানুষ। উৎফুল্ল মনে মালিকের বিয়ের দাওয়াতে শ্রমিকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অবাক করেছে সবাইকে।


২ জানুয়ারি সোমবার ইদ্রিস গ্রুপের পরিচালক গুলজার মোহাম্মদ ইয়াহ্ ইয়া জিহানের বৌভাতের জমকালো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয় ওই প্রতিষ্ঠানের চার হাজার শ্রমিক। এর আগে দু‘দফায় ঢাকা এবং শেরপুরে সঙ্গীতানুষ্ঠানসহ বৌভাত অনুষ্ঠিত হয়। সঙ্গীতানুষ্ঠানে সংগ্রীত পরিবেশন করেন দেশের জনপ্রিয় শিল্পী হাবিব ওয়াহিদ, প্রীতম হাসান, প্রতীক হাসান এবং নৃত্য পরিবেশন করেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী দীঘী, লাক্স তারকা টয়াসহ অন্যান্য শিল্পীবৃন্দ। সোমবারের দিনটিতে ছিল না কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ভেদাভেদ।

বিয়ের কনে বাংলার আলোচিত চিত্রনায়ক ফেরদৌসের ভাতিজী নুসফাত সুমাইরা। এর আগে ঢাকায় গায়ে হলুদ ও বিয়ের অনুষ্ঠান হলেও শ্রমিকদের জন্য ছিলো নিজ শহরে বৃহৎ আয়োজন। গেলো ২০ ও ২২ ডিসেম্বর হয়েছে দেশের নামকরা শিল্পীদের নিয়ে সঙ্গীতানুষ্ঠান ও রিসিপশন। এই আয়োজনেও কোম্পানীর প্রতিটি শাখায় ছিলো শ্রমিকদের জন্য বড় পর্দায় অনুষ্ঠান উপভোগের ব্যবস্থা।


শ্রমিকরা জানান, তাদের মালিকের এমন আয়োজনে সবাই অনেক খুশি। অনেকে আবার পরিবার নিয়ে এসেছে দাওয়াত খেতে। অনুষ্ঠান ঘিরে শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের মধ্যে বিরাজ করছিল উৎসবের আমেজ। সকাল থেকে সবাই রঙ্গিন কাপড় পড়ে কোম্পানীর মূল ফ্যাক্টরিতে প্রবেশ করে। যা ছিল অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক ব্যতিক্রম। অনেকে দিনটিকে স্মরণীয় করতে ছবি তোলায় ছিলেন ব্যস্ত। পরিচালকের নতুন সহধর্মিনীর সাথে ছবি তুলতে পেরে আনন্দিত সবাই। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে।


ইদ্রিস গ্রুপের পরিচালক তরুণ শিল্পপতি গুলজার মোহাম্মদ ইয়াহ ইয়া জিহান জানান, আমার বাবা প্রয়াত ইদ্রিস মিয়া প্রতি বছর বিভিন্ন উপলক্ষে আমাদের সব শ্রমিক, এলাকার গণ্যমান্য লোকদের নিয়ে প্রীতি ভোজের আয়োজন করতেন। আমার বিয়ে নিয়েও বাবার বেশ পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু তিনি তা শেষ করে যেতে পারেন নি। তবে আমার শ্রমিকদের সেই আগ্রহটা আমি পূরণ করার চেষ্টা করেছি।
এদিকে অনুষ্ঠান ঘিরে এক মাস ধরে কোম্পানীর ভিতরে শুরু হয় সাজসজ্জার কাজ। সোমবার ছিল বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান। এছাড়া পুরো কমপ্লেক্স জুড়েই ছিল লাইটিংসহ নানা রকমের সাজ-সজ্জা। কয়েকটি পর্বে সাজানো হয় অনুষ্ঠান মালা। লাল গালিচা এবং ফুল ছিটিয়ে বর-কনে বরন করে শ্রমিকরা। বর-কনেও সব শ্রমিকদের সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠে। এ সময় সবাই বর-কনের সঙ্গে ছবি তুলেন।


দুপুরের খাবার শেষে মালিক-শ্রমিক ছিল না কোনো দূরত্ব। আনন্দ-উল্লাসে সবাই হয়ে পড়েছিলেন একাকার। বিত্ত-বৈভব ছেড়ে অন্তর থেকে নিজ শ্রমিকদের ভালোবেসেই এমনটা করেছেন ইদ্রিস গ্রুপের পরিচালক গুলজার মোহাম্মদ ইয়াহ্ ইয়া জিহান।