সিলেটে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার চোরাই চিনি জব্দ, আটক ৫ অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১২:৫৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০২৪ সিলেটে এবার ১ লাখ কেজি ভারতীয় চোরাই চিনি জব্দ করা হয়েছে। যার মূল্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে এসব চিনি জব্দ করে। এসময় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। সিলেটের চোরাকারবারিরা দিন দিন হয়ে উঠছে অতি বেপরোয়া। প্রায় প্রতিদিনই সিলেটে ধরা পড়ে ভারতীয় চোরাই চিনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর নিয়মিত অভিযান, সংবাদমাধ্যমে অবিরাম চোরাচালানবিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ- এমনকি মহান জাতীয় সংসদে পর্যন্ত আলোচনা হয় সিলেটের চোরাকারবারিদের নিয়ে। কিন্তু কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না তাদের দৌরাত্ম্য। গত কয়েক মাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই সিলেটে ধরা পড়ছে লক্ষ লক্ষ টাকার চিনিসহ ভারতীয় বিভিন্ন চোরাই পণ্য। সবচেয়ে বেশি হৈ-চৈ ফেলে গত ৬ জুন জব্দকৃত সিলেটে সবচেয়ে বড় ভারতীয় চিনির চালান। সিলেটের জালালাবাদ থানাধীন হাটখোলা ইউনিয়নের উমাইরগাঁওয়ের ভাদেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়ক থেকে পুলিশ ১৪টি ট্রাক ভর্তি ২ হাজার ১১৪ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করে। প্রায় পৌণে দুই কোটি টাকা মূল্যের চিনির ওই চালানের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ জন আটক হলেও মূল হোতা একজনও ধরা পড়েনি। এক সাথে ১৪ ট্রাক চিনি আটকের ঘটনায় সিলেটসহ সারা দেশে এসময় তোলপাড় শুরু হয়। এরপর কয়েকদিন চোরাকারবারীরা সতর্ক ছিল। অনেকটা চোরাকারবার। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতে ফের শুরু হয় চোরাকারবারের মহোৎসব। গত কয়েক মাসে সিলেটে অন্ততঃ অর্ধশত কোটি টাকার চোরাই চিনি জব্দ করেছে প্রশাসন। এমনকি বন্যার মাঝেও থেমে নেই চিনি চোরাচালান। সীমান্ত এলাকা থেকে জলমগ্ন রাস্তা ও নৌপথে চোরাকারবারীরা চিনি নিয়ে আসছে মহাসড়কে। সেখানে বড় ট্রাক, পিকআপ এমনকি মোটরসাইকেলে করেও নিয়ে আসা হয় সিলেট শহরে। শহরের বিভিন্ন গুদামে রেখে ভারতীয় সীলযুক্ত বস্তা পরিবর্তন করে পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের সীমান্তবর্তী চার উপজেলার মধ্যে চোরাই চিনি চোরাচালানের অন্যতম রুটে পরিণত হয়েছে গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি সীমান্ত। তবে কেবল বিছনাকান্দি নয়; গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার সীমান্ত দিয়ে আসছে ভারতীয় চিনি। অন্যদিকে, উপজেলার নকশিয়া পুঞ্জি পিয়াইন ও ডাউকি নদী, জিরো পয়েন্ট, লামাপুঞ্জি, গুচ্ছগ্রাম, লালমাটি, সংগ্রামপুঞ্জি, তামাবিল, নলজুরী ও তালাবাড়ী দিয়ে ভারতীয় চোরাই চিনি নিয়ে আসা হয়। বন্যার আগে এসকল সীমান্ত দিয়ে আসা চোরাই চিনির চোরাচালান সর্বপ্রথম হাদারপাড়ে নিয়ে আসা হতো। এরপর ট্রাক, পিকআপ কিংবা অন্য ছোটো যানবাহনের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হতো হরিপুরে। বর্তমানে সীমান্ত থেকে সরাসরি নৌকাযোগে চোরাচালান নিয়ে যাওয়া হয় হরিপুরে। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, জৈন্তাপুর উপজেলার ৩৫টি স্পট দিয়ে নিয়মিত নিয়ে আসা হয় ভারতীয় চোরাই চিনির চোরাচালান। অপরদিকে, ভারতীয় চোরাই চিনির কারবার থেমে নেই সীমান্তবর্তী উপজেলা কোম্পানীগঞ্জেও। উপজেলার উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের বরম সিদ্ধিপুর, মাঝেরগাঁও, উৎমা, লামাগ্রাম ও তুরং এলাকা দিয়ে আসে চিনির চোরাচালান। এছাড়াও উপজেলার ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের নারাইনপুর, চিকাডহর ও ছনবাড়ি দিয়েও চিনির চোরাচালান আসে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। এছাড়া কানাইঘাটেও চোরাকারবারিরা তৈরি করেছে অনেক নিরাপদ রুট। জানা গেছে, কানাইঘাটের চার সীমান্ত দিয়ে দেদারসে নিয়ে আসা হয় অবৈধ চিনি। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত সিলেট জেলা পুলিশ ও সিলেট মহানগর পুলিশের বিভিন্ন থানায় চোরাই চিনি চোরাচালানের ঘটনায় মোট ৬১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে গ্রেফতার করা হয়েছে ১৪৭ জনকে। এসবের মধ্যে জৈন্তাপুর থানার একটি মামলার (মামলা নং-০৯/ তারিখ ১৬/০৬/২০২৪) আসামি মনসুর আহমদ নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সাথে তার শ্যালক আব্দুল কাদিরও এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার মো জাকির হোসেন খান (পিপিএম) বলেন- চোরাই পণ্য ঠেকাতে মহানগর এলাকায় নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে ৬টি থানা ও গোয়েন্দাপুলিশ। চোরাই পণ্য জব্দ করার সময় ধৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করা হয় এবং পরবর্তীতে চার্জশিভুক্ত আসামিও করা হয় তাদের। এছাড়া তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে অন্য কারবারিদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করে পুলিশ। Related posts:আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করলো শেরপুর আইটি পার্কময়মনসিংহে জেএসসিতে পাসের হার ৮৭.২১ শতাংশ ॥ পাসের হারে এগিয়ে শেরপুরলকডাউনে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম দেখতে ময়মনসিংহে সেনাপ্রধান Post Views: ৮৬ SHARES সারা বাংলা বিষয়: