শেরপুর হাসপাতালে স্বজনদের অভিযোগ ভুল ইনজেকশন, চিকিৎসকরা বলছেন ম্যাস হিস্টিরিয়া

প্রকাশিত: ৫:৩৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০২৪

শেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে ভুল ইনজেকশন দেওয়ার পর অন্তত অর্ধশত ভর্তি রোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। ১৩ অক্টোবর রবিবার রাতে হাসপাতালের ৭ নম্বর মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ওই ঘটনা ঘটে। যদিও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এটি ইনজেকশনের ফলে নয়; এরা হিস্টিরিয়া নামক একটি মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন।

হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর স্বজনরা জানান, রবিবার রাতে ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স রোগীদের অসুধ ও ইনজেকশন দেয়। এর কিছুক্ষণ পরই একে একে রোগীরা শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি, বমি ও জ্বরে আক্রান্ত হতে থাকেন। ওইসময় আতঙ্কিত হয়ে পরেন রোগীর স্বজনরা। সেসময় দায়িত্বরত নার্সদের জানানো হলেও তারা কোনো সাড়া দেননি। পরে রোগীর স্বজনরা তাদের রোগীদের দ্রুত জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। অসুস্থ ৩ জনের অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাদের ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। তবে রোগীদের কি ইনজেকশন দেয়া হয়েছে এর সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসক এসে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
হাসপাতালের আরএমও ডা. হুমায়ুন কবীর নূর বলেন, ঘটনা শোনার পর রাত দেড়টা অবধি আমরা চেষ্টা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী, স্বজন ও কর্তব্যরত নার্সদের সাথে কথা বলে বা অনুসন্ধানে জেনেছি, গত একমাস যাবত সকল ওয়ার্ডে সেফরাড নামক যে ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে সেই ইনজেকশনই মহিলা ওয়ার্ডের রোগীদেরও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অন্য ওয়ার্ডে কোন সমস্যা না হলেও মহিলা ওয়ার্ডে সমস্যা হয়েছে। আমরা আরও জেনেছি একজন রোগী ইনজেকশনের পর ড্রাগফোবিয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। আর তা দেখেই তীব্র গরমের মাঝে হয়তো ভয়ে অন্যান্য রোগীরা ম্যাস হিস্টিরিয়াতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। আমরা তাদের দ্রুত আলাদা করে নিচতলায় এনে চিকিৎসা দেওয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সেফরাড ইনজেকশনটি দেওয়া বন্ধ রয়েছে। যদিও আর কোন সমস্যা হয়নি। এরপরও আমরা বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে দেখব।
এ ব্যাপারে শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ইনজেকশনের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েননি তারা। ম্যাস হিস্টিরিয়া নামক একটি মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তারা। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ভয় ও অতিরিক্ত আবেগ লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানে সবাই সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন।