ধর্ষকদের ক্রসফায়ারে দিলে পাপ হবে না, বেহেশতে যাওয়া যাবে: সংসদে এমপি

প্রকাশিত: ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০২০

শ্যামলী নিউজ ডেস্ক : জাতীয় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করে ধর্ষকদের ক্রসফায়ারে দেয়ার দাবি জানিয়ে সরকারি ও বিরোধীদলীয় এমপিরা এক জোট হয়ে বলেছেন, এই পৃথিবীতে ধর্ষকদের থাকার কোনো অধিকার নেই। আবার কেউ কেউ দাবি করেন, ধর্ষকদের ক্রসফায়ারে দিলে কোনো পাপ হবে না বরং বেহেশতে যাওয়া যাবে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে এসব কথা বলেন তারা।

ধর্ষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এরশাদ সরকারের আমলে এসিড সন্ত্রাস খুব বেড়ে গিয়েছিল। তিনি ও তার সরকার উদ্যোগ নিয়ে প্রতিরোধের জন্য এসিড-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা করেছিলেন। আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাই, এখন ধর্ষণ করলে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আমার মনে হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে এই ধর্ষণ থামানো যাবে না। ধর্ষণে দায়ী ব্যক্তিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ব্যবস্থা না করে মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা করা হোক।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনার মন্ত্রণালয় এত ক্রসফায়ার দিচ্ছে, বন্দুকযুদ্ধে মানুষ মারা যায়, ধর্ষণের মত একটি জঘন্য অপরাধে আজও একজন বন্দুকযুদ্ধে মারা গেল না! এ বিষয়টি সরকার গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।

কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, সম্প্রতি ধর্ষণ মহামারী রূপ নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী, শিশু, নারী, শ্রমিক, প্রতিবন্ধীরাও ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। ধর্ষকদের যখন গ্রেফতার করা হয়, তখন এই দেশের মানুষ মনে রাখে। কিন্তু বিচার যখন শেষ হয় তখন মানুষ সেটা মনে রাখতে পারে না। কারণ ১০ থেকে ১৫ বছর পর এই ধর্ষণের বিচার হয়। আলোচিত শারমিন ধর্ষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার পিতা এ দেশের স্বনামধন্য একজন শিল্পপতি হয়েও বিচার পেতে ১৬ বছর লেগেছে। বিচার নিয়ে কোর্টকাচারি করতে করতে ১৬ বছর লেগেছে। খরচ হয়েছে ৪ কোটি টাকা। ফাঁসি হয়েছে মাত্র একজনের।

তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে যদি এই সমাজকে ধর্ষণমুক্ত করতে চান- তাহলে এনকাউন্টার বা তাকে গুলি করে মারতে হবে। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর ধর্ষণকারীকে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যাওয়া হোক জিজ্ঞাসাবাদের নামে। তাকে নিয়ে ওখানে গুলি করে মারুক।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভারতে একবার বাসে এক নারীকে ধর্ষণের কারণে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের ক্রসফায়ারে মেরে ফেলা হয়। তারপর ভারতে ধর্ষণের ঘটনা কমে যায়। আইনমন্ত্রী এ বিষয়ে কঠোর আইন করবেন। যারা এ কাজ করেছেন তাদের এই পৃথিবীতে থাকার কোনো অধিকার নেই। এজন্য আমি চুন্নুর প্রস্তাবকে সমর্থন করি।

পরে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, আমি টুপি মাথায় দিয়ে আল্লাহকে হাজির-নাজির করে বলছি এদের ক্রসফায়ারে দিলে কোন পাপ হবে না বরং বেহেশতে যাওয়া যাবে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদের বৈঠকে এ বিষয়ে প্রথমেই আলোচনার সূত্রপাত করেন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। এরপর একে একে বক্তব্য রাখেন কাজী ফিরোজ রশীদ, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী প্রমুখ।