টিকা আবিষ্কার হলেই কি মহামারি শেষ হবে অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ৩:৪৬ অপরাহ্ণ, মে ১২, ২০২০ অনলাইন ডেস্ক : নতুন করোনাভাইরাস যদি ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো ভাইরাসে পরিণত হয় শেষ পর্যন্ত, তাহলে টিকা আবিষ্কার হলেই কী সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? মহামারি বন্ধ হয়ে যাবে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, অতটা সহজ হবে না। তখন বিশ্বের ৭০ শতাংশ জনসংখ্যা বা সাড়ে পাঁচশ’ কোটি মানুষকে হার্ড ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য টিকা দিতে হবে। এ ছাড়া ভাইরাস ঠেকানো সম্ভব হবে না। আবার টিকা আবিষ্কার হলেও যে তা সব দেশ সমানভাবে তা ব্যবহার করতে পারবে তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। উগ্র জাতীয়তাবাদী আবেশের জেরে টিকা উৎপাদনকারী ধনী দেশগুলো তো তখন দরিদ্র দেশগুলোর দিকে নজর নাও দিতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যে বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তিত তা হলো, টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো সেসব দেশগুলোর কাছেই টিকা বিক্রি করবে, যে দেশগুলো বেশি অর্থ দিয়ে তা কিনতে পারবে। নিশ্চিতভাবেই ধনী দেশগুলো সে টিকা কিনতে সক্ষম। আবার, যেসব দেশে টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর অবস্থান, সেসব দেশের সরকার নিজেদের নাগরিকদের জন্য বিপুল পরিমাণ টিকা রেখে দেবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে টিকা সরবরাহে সহায়তা করে গ্যাভি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী সেথ বার্কলে বলেন, ধনী দেশগুলো শুধু নিজেদের চিন্তা করলে আদতে কোনো ফল পাওয়া যাবে না। কারণ ভাইরাস রোধ করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, নিজ দেশের পাশাপাশি অন্য দেশেরও কেউ যাতে আক্রান্ত না হয় সেদিকে জোর দেওয়া। বৈশ্বিক সমস্যায় একা ভালো থাকা যায় না। ২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লুর টিকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে অবস্থার সৃষ্টি করেছিল তা মনে করিয়ে দিয়েছেন অনেকেই। ওই সময় দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন বারাক ওবামা। তার প্রশাসন নাগরিকদের জন্য ৬০ কোটি ডোজ টিকা কিনে নিয়েছিল। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয় অন্য পশ্চিমা দেশগুলোর সরকারও একই কাজ করেছিল। এর ফলে সোয়াইন ফ্লুর টিকা সরবরাহ ব্যবস্থা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অনেক দরিদ্র দেশ প্রয়োজনের সময় টিকা থেকে বঞ্চিত হয়। এতে ক্ষোভ তৈরি হয়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো উগ্রপন্থি প্রেসিডেন্ট ও সরকার প্রধানদের জন্য ১১ বছর আগের সেই অবস্থার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর সম্ভাবনা আরও বেশি। কারণ তারা যে কোনো উপায়ে পুরো মাত্রায় অর্থনীতি সচল করতে চান। তাই জনগণকে টিকার আওতায় আনার বিকল্প নেই তাদের সামনে। করোনাভাইরাস মহামারির এই সময়টাতে ভেন্টিলেটরসহ জীবনরক্ষাকারী উপাদান পশ্চিমের দেশগুলো যেমন ‘আগ্রাসীভাবে দখলে’ নিয়েছে তা দেখে দরিদ্র দেশগুলো রীতিমতো হতাশ। টিকা আবিষ্কারের পরও যে এমন পরিস্থিতি হবে না তার নিশ্চয়তা কী? সোজা কথা হলো, করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কার হলে সর্বপ্রথম সুবিধা পাবে ধনী দেশগুলো। এরপর সরবরাহ ব্যবস্থায় ঘাটতি তৈরি হবে এবং দরিদ্র দেশগুলোর জনগণ বেশ দেরীতে টিকা পেতে শুরু করবে। আর সে জন্য করোনাভাইরাসের টিকার সুষম বন্টনের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সূত্র : দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট। Related posts:তেহরানে সর্বোচ্চ নেতা খামেনির নেতৃত্বে রাইসির জানাজা অনুষ্ঠিতভয়াবহ ভূমিকম্প : তুরস্ক-সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজারের কাছাকাছিগাজায় আবারও ত্রাণপ্রত্যাশীদের ওপর ইসরায়েলের গুলি, নিহত অন্তত ১৯ Post Views: ২৪৬ SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: