শেরপুরে সুপারি চুরির অভিযোগে স্কুলছাত্র হত্যা ॥ প্রধান আসামির ২ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর

প্রকাশিত: ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৬, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : শেরপুরে সুপারি চুরির অভিযোগ তুলে হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী কিশোর নূরে আলম (১২) কে হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলায় পলাতক থাকার দীর্ঘ প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর পর গ্রেফতার হয়েছে প্রধান আসামি মামুনুর রশিদ মামুন (৩১)। ২৪ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে ৭ দিনের পুলিশ রিমাণ্ডের আবেদনের বিষয়ে উভয় পক্ষের শুনানী শেষে ২ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান মাহমুদ। এর আগে ২১ জুন রাতে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন হোতাপাড়া এলাকা থেকে তাকে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেফতার করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জামালপুরের পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক রকিবুজ্জামান তালুকদার। কোর্ট পরিদর্শক খন্দকার শহীদুল হক ওই আসামির রিমাণ্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক রকিবুজ্জামান তালুকদার বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানান, গ্রেফতারকৃত মামুনুর রশিদ মামুন ওই হত্যা মামলার এজাহারনামীয় প্রধান আসামি। সে ওই ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত মর্মে তদন্তে যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। সে এতদিন থেকেই পলাতক ছিল। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অবশেষে তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। তাকে পুলিশ রিমাণ্ডে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে ওই হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন এবং অন্যান্য আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করা সম্ভব হতে পারে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রবিবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জেলা কারাগার হতে পিবিআই অফিসে নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সদর উপজেলার মুন্সীরচর পূর্বপাড়া এলাকার হতদরিদ্র গোপন মিয়ার ছেলে ও স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুরে আলমকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি সন্ধ্যার পর প্রতিবেশি মতি মিয়া ও তার ছেলে মামুনসহ বাড়ির লোকজন বাগানের সুপারি চুরির অজুহাতে আটক করে শারীরিক নির্যাতন চালায়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ছুটে গেলেও নুরে আলমের কোন হদিস পায়নি। পরদিন সকালে পার্শ্ববর্তী একটি কাঠাল গাছের ডালে নিজের গায়ের জ্যাকেট মোড়ানো অবস্থায় নুরে আলমের লাশ দেখা যায়। এরপর থানা পুলিশ ঘাড় মটকানো, মুখে, গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্নসহ নুরে আলমের লাশ উদ্ধার করলেও ওই ঘটনায় হত্যা মামলা না নিয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা রেকর্ড করে। ফলে নুরে আলমের বাবা বাদী হয়ে মতি মিয়া ও মামুনসহ ৭ জনকে আসামি করে ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। পরে জেলা সদর হাসপাতালে স্কুলছাত্র নুরে আলমকে ‘ঘাড় মটকে হত্যা’র আলামত পাওয়া যায় ময়নাতদন্তে। বাদীপক্ষের অভিযোগ, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় থানা পুলিশের পর সিআইডিতে তদন্তকালে কোন আসামিই গ্রেফতার হয়নি। উপরন্তু মামলায় আদালতে দাখিল হয় চূড়ান্ত রিপোর্ট (সত্য)। এরপর বাদীপক্ষের নারাজীর প্রেক্ষিতে মামলাটি পিবিআইয়ে তদন্তে যায়। পিবিআইয়ের তদন্তে মামুনসহ এ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ৩ জন।