আপাতত পরিচালনার ইচ্ছে নেই ঈশিতার

প্রকাশিত: ৪:৫৪ অপরাহ্ণ, জুন ২৭, ২০২১

বিনোদন প্রতিবেদক : ‘বর্তমান সময়ে যেসব কাজের প্রস্তাব পাই, সেখানে নিজের অভিনীত চরিত্র কতটা বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার সুযোগ আছে তা প্রথমে দেখি। তারপরও কোন কাজটি ভালো, কোনটি মন্দ তা আগে থেকে নির্ধারণ করা কঠিন। এ জন্য যে গল্প ও চরিত্র ভালো লাগে এবং যেসব নির্মাতার কাজে নিজস্বতার ছাপ আছে, তাদের প্রাধান্য দিই। অভিনয় জীবনে এভাবেই কাজ করে যেতে চাই।’ নিজের অভিনীত চরিত্রগুলো নিয়ে এমন কথাই শোনালেন নন্দিত অভিনেত্রী রুমানা রশীদ ঈশিতা।
তার এ কথা যে মিথ্যা নয়, এর প্রমাণ পাওয়া যায় সাম্প্রতিক কাজগুলোর দিকে চোখ বুলালে। গত বছরের ঈদে টেলিভিশনে প্রচার হওয়া আশফাক নিপুণের ‘ইতি মা’ টেলিছবিতে দর্শকরা ঈশিতার অভিনয়ে মুনশিয়ানা দেখেছেন। সেই নাটকে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের বড় সন্তানের চরিত্রটি বারবার আমাদের ভঙ্গুর সমাজব্যবস্থাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। এতে তার অভিনীত ‘নার্গিস’ চরিত্রটি দর্শকমনে ছাপ ফেলেছে। এ ছাড়া সেই বছরের মাহমুদুর রহমান হিমির ‘কেন’ নাটকেও আলো ছড়িয়েছেন ঈশিতা। তারও আগে একাধিক নাটকে অভিনয় করে দর্শকের মনোযোগ কেড়েছেন এ অভিনেত্রী। নাটকের চরিত্রগুলো দেখে অনেকেই স্বীকার করেছেন- গল্প, চরিত্র নির্বাচন এবং অভিনয়ে ঈশিতার দৃষ্টিভঙ্গি অনেকের চেয়ে আলাদা। শুধু এ মন্তব্যই নয়, অভিনয়ের প্রশংসাও শোনা গেছে অনেকের মুখে।
এরপর মাঝে অনেকটা সময় অভিনয়ে আর পাওয়া যায়নি ঈশিতাকে। করোনায় ঘরবন্দি ছিলেন। বিরতি ভেঙে আবার ফিরেছেন। কাজ করেছেন মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘নট আউট’ নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে। এক পরিবারের অপরাজিত যুদ্ধের গল্পে নির্মিত হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি। এতে ঈশিতাকে পরিবারের বড় মেয়ে ‘তানিয়া’ চরিত্রে দেখা যাবে। বিরতির পর অভিনয় প্রসঙ্গে ঈশিতার ভাষ্য, ‘করোনার কারণে ঘরবন্দি ছিলাম অনেক দিন। কারণ কাজের চেয়ে এই সময়টায় নিজের ও পরিবারের সবার নিরাপদ ও সুস্থ থাকাটা বেশি জরুরি। করোনার প্রকোপ কমায় শিল্পীসত্তাকে খুশি করতে অভিনয়ে ফিরেছি। এর আগে নির্মাতা আরিয়ানের অনেক কাজ দেখেছি। তার কাজের ধরনও আমার পছন্দের। আশা করছি, ভালো কিছু হবে।’ বর্তমান সময়ে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও টেলিভিশন মাধ্যমে অনেক নাটক-টেলিছবি প্রচার বেড়েছে। তাই তো ঈশিতার কাছে জানতে চাই, এই সময়ে কাজগুলো কেমন হচ্ছে? জবাবে বলেন, ‘নানা ব্যস্ততায় আগে টিভি নাটক দেখার সুযোগ পেতাম না। এখন টিভিতে না হলেও বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে নাটকগুলো দেখি। ভালো কাজ, মন্দ কাজ সবসময় ছিল। এখন অনেক ভালো নাটক হচ্ছে। যারা পরিশ্রম ও মানসম্মত গল্প নিয়ে এগিয়ে যান তাদের কাজ নিয়ে আলোচনা হয়।
গত ঈদে তো শত শত নাটক প্রচার হয়েছে। শুধু কয়েকটি ভালো কাজ নিয়েই কথা হয়েছে।’ প্রায় তিন দশক ধরে ঈশিতা এই সংস্কৃতি অঙ্গনের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন। তার অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছেন একাধিক প্রজন্মের দর্শক। শুধু অভিনয় নয়; নাচ, উপস্থাপনা ও গান দিয়েও তিনি আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন সবার মনে। আজকের অবস্থানে আসতে তাকে পার হতে হয়েছে অনেক দীর্ঘ পথ। কেমন ছিল সেই পথচলা? ঈশিতা বলেন, “পেছন ফিরে তাকালে ‘নতুন কুঁড়ি’ থেকে শুরু করতে হবে। ১৯৮৮ সালের কথা। তখন আমার বয়স ছিল ৭ বছর। ওই সময় ‘ফালানী’ চরিত্র দিয়ে মানুষ আমাকে চিনেছে। এরপর কাজ করে গেছি। চোখের সামনে ‘প্যাকেজ’ হলো। বড় হয়ে মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করেছি। ১১ বছর একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে চাকরি করেছি।
অভিনয়ের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি টিভি নাটক নির্মাণ করেছেন ঈশিতা। ‘নির্জনে আড়ালে’, ‘স্বপ্ন স্বপ্নীল’, ‘গোধূলি বেলায়’ কাজগুলো দর্শকরা পছন্দ করেছেন। ঈশিতা বলেন, ‘আমি নির্মাতা হতে চাই- এ রকম ভাবনা থেকে কাজ করিনি। যখন চাকরি করতাম, তখন অফিসিয়াল নির্দেশনা পালন করেছি। সেই সময় পরিচালনায় আগ্রহ ছিল। নিউইয়র্কে পরিচালনার ওপর একটি কোর্সও করেছিলাম। পরে আর পরিচালনা করা হয়নি। এখন আপাতত পরিচালনার আর ইচ্ছা নেই।’