ঝিনাইগাতীতে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২১ ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি : শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার আহাম্মদ নগর-দিঘীরপাড় পাকা সড়কে পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট খালের ওপর একটি কাঠের সেতু নির্মাণের জন্য দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়ার ১০ দিন অতিবাহিত হলেও সেতু নির্মাণ হয়নি। অবশেষে স্বেচ্ছাশ্রমে প্লাস্টিকের ২০টি ড্রামের ওপর প্রায় ৮০ ফুট দৈর্ঘ্য বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছেন স্থানীয় লোকজন। ১৩ জুলাই মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে তিনটায় সাঁকোটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এতে প্রায় তিন হাজার মানুষের কিছুটা দুর্ভোগ কমেছে। তবে ওই স্থানে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ১৩ দিন ধরে প্লাস্টিকের চারটি ড্রাম ও বাঁশের তৈরি ভেলা দিয়ে পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট এ খালটি পারাপার হচ্ছিলেন স্থানীয়রা। জানা গেছে, ২৮ জুন রাত থেকে টানা তিনদিনের ভারী বর্ষণ ও সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এ উপজেলার দিঘীরপাড় মধ্যপাড়া এলাকার সিরাজ মাস্টারের বাড়ির কাছে মহারশি নদীর বাঁধের প্রায় ৭০ ফুট বাঁধ ভেঙে যায়। এতে নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। ওই দিন আহাম্মদনগর-দিঘীরপাড় পাকা সড়কের দিঘীরপাড় মধ্যপাড়া এলাকার নুরুল ইসলামের বাড়ির কাছে একটি ইউড্রেনসহ প্রায় ৮০ ফুট পাকা সড়ক ভেঙে যায়। এতে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে ৩ জুলাই বিকালে উপজেলা চেয়ারম্যান এসএমএ ওয়ারেজ নাইম, ইউএনও ফারুক আল মাসুদ, উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোজাম্মেল হক, সদর ইউপি সদস্য (তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) আব্দুল কুদ্দুস ওই স্থানটি পরিদর্শন করেন। এ পথে চলাচলকারীদের বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহৃত রাস্তা মহারশ্মি নদীর বাঁধও ভেঙে যাওয়ায় তাদের দুর্ভোগ লাঘবে জরুরি ভিত্তিতে একটি কাঠের সেতু নির্মাণের জন্য সদর ইউপি সদস্য (তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) আব্দুল কুদ্দুসকে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দ দেয়ার ১০ দিন অতিবাহিত হলেও ওই স্থানে কোন কাঠের সেতু বা বাঁশের সাঁকো নির্মিত হয়নি। তাই এলকাবাসীর কেউ দিয়েছেন বাঁশ, কেউ দিয়েছেন টাকা আর কেউ দিয়েছেন স্বেচ্ছাশ্রম-এভাবেই সবাই মিলে স্বেচ্ছাশ্রমে প্রায় ৮০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৮ প্রস্থের সাঁকোটি নির্মাণ করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা মো. ফরিদ মিয়া বলেন, ‘আমরা ১৩-১৪ দিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছি। গত ১০ দিন আগে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও স্যারসহ আরও অনেকেই এ স্থানটি পরিদর্শন করেন। ওই সময় একটি কাঠের সেতু নির্মাণের জন্য উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। অথচ আজ (সোমবার) ১০ দিন পার হইল, একজনেরও আর দেখা পেলাম না। তাই এলাকাবাসীরা সবাই মিলে গত ২ দিন ধরে বাঁশ ও টাকা উত্তোলন করে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করলাম আমরা। তবে ওই স্থানে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।’ এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য (তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘বরাদ্দের তিনদিন পর প্রাক্কলনের কাগজ হাতে পাইছি। প্রাক্কলনে ৩৬টি সিমেন্টের খুঁটি ধরা হয়েছে। মিস্ত্রি দিয়ে খুঁটি তৈরির কাজ শেষ হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় কাঠেরও অর্ডার দেয়া হয়েছে। খুঁটি শুকাইতে সময় লাগবে। আশা করছি ঈদুল আযহার দুই-তিন দিনের মধ্যেই সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হবে।’ এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ভেঙে যাওয়া সড়কটিতে একটি কাঠের সেতু নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। বরাদ্দের ১০ দিন অতিবাহিত হলেও কাজ শুরু হয়নি জানতে চাইলে জবাবে বলেন, খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানানো যাবে।’ উপজেলা চেয়ারম্যান এসএমএ ওয়ারেজ নাইম বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে সেতু নির্মাণের কাজের গতি বাড়ানো হবে।’ Related posts:আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে ঝিনাইগাতীতে মতবিনিময় সভাশেরপুরে কালেক্টরেটের বিভিন্ন শাখা পরিদর্শন করলেন নবাগত ডিসি মোমিনুর রশীদশেরপুরে পূর্বশত্রুতার জের ধরে হামলা, স্বামী-স্ত্রীসহ আহত ৪ Post Views: ১৯৯ SHARES শেরপুর বিষয়: