শ্যামলী নিউজ ডেস্ক : সকাল দশটা, জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের মূল ফটক পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করল টিম বাংলাদেশকে বহনকারী বাস। এক এক করে বাস থেকে নেমে এলেন সাকিব-মুশফিকরা, কোচিং স্টাফের সদস্যরাও। মিনিট পনের পর তারা নেমে গেলেন মাঠে, কাঠফাটা রোদে ঘণ্টা দুয়েকের অনুশীলনে নিজেদের ঝালিয়ে নিলেন। এরপর ফিরে গেলেন টিম হোটেল রেডিসন বøুতে। সকালে অনুশীলন আর অনুশীলন সেশনটা ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকার প্রধান কারণ দুটো প্রথমত, এই ভেন্যুতেই সন্ধ্যায় আফগানিস্তান-জিম্বাবুয়ে ম্যাচ ছিল। তাই বিকালে অনুশীলন করার সুযোগ ছিল না।

দ্বিতীয়ত, শুক্রবার জুমার দিন। দলে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের সংখ্যা কম নয়, তারা জুমার নামাজ আদায় করবেন, তাই মাঠ ছাড়ার তাড়া ছিল। ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের আজকের ম্যাচটির কার্যত কোনো গুরুত্ব নেই। আগের দিন বিশ্রামে কাটিয়ে দেওয়ার পরও শুক্রবারের অনুশীলনপর্বটা দীর্ঘ না হওয়ার পেছনে হতে পারে তৃতীয় কারণ! দুই দলই ২৪ সেপ্টেম্বর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করেছে, আজকের ম্যাচটি তাই শুধু সেই ফাইনালেরই মহড়া।  সেটা নিয়ে আফগানিস্তানের ভাবনা জানার উপায় ছিল না শুক্রবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দলটির ম্যাচ থাকায়। তবে সব ম্যাচ জিতে ফাইনালে মাঠে নামার লক্ষ্যের কথা টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই জানিয়ে রেখেছে রশিদ খানের দল।
আফগানরা অজেয় থেকে ফাইনাল খেলুক, সেটা কিন্তু কিছুতেই চাইছে না টাইগাররা। জিম্বাবুয়ে যদি শুক্রবারের ম্যাচে রশিদদের জয়রথ থামাতে নাও পারে, ফাইনালের মহড়ায় আজ সাকিবের দল সেটা করে দেখাতে চায়। টানা চারটি টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানের কাছে হারের পর জয়ে ফেরার অপেক্ষা আর দীর্ঘায়িত করতে চায় না স্বাগতিকরা। ফাইনালে নামার আগেই মনের মধ্যে জেঁকে বসা আফগানভীতিটা দূর করতে চায় তারা। আগের ম্যাচে জিম্বাবুয়ে হারানোর পরই সেই চাওয়ার কথা জানিয়েছেন অধিনায়ক সাকিব। তার ডেপুটি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তো ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে আরও খোলামেলাভাবেই জানিয়েছেন দলের চাওয়ার কথা।
শুক্রবার অনুশীলন শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে আসা ডানহাতি অভিজ্ঞ পেসার শফিউল ইসলামও কথা বললেন একই সুরে, ‘আমার মনে হয় (ফাইনালের) প্রস্তুতির জন্য ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি ভালো খেলি, সেটাতে সবার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। আর জয়ের যে অভ্যাসটা হবে, সেটা আমাদের সাহায্য করবে ফাইনালে।’ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের (দশম) থেকে র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে আফগানিস্তান (সপ্তম)। রশিদ-নবীদের দল এই সংস্করণে খেলছেও দুর্দান্ত। ফাইনালের মহড়ায় তাদের হারানো যাবে তো? শফিউল বললেন, সম্ভব। কিভাবে? ডানহাতি পেসারের উপলব্ধি, ‘আমাদের যে ভুলগুলো আছে সেগুলো যদি শোধরাতে পারি, যার যার অবস্থান থেকে শতভাগ দিতে পারি তাহলে ওদেরকে হারানো সম্ভব।’
সেরাটা দিতে পারবে তো ওরা ১১ জন? সাম্প্রতিক সময়ে টিম বাংলাদেশের শ্রীহীন পারফরম্যান্স সংশয় জাগাচ্ছে। তবে সবশেষ ম্যাচে টাইগারদের পারফরম্যান্স কিন্তু আশাজাগানিয়াই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন বিভাগেই চেনা ছন্দে দেখা গেছে তাদের। এবার ছন্দটা ধরে রাখার পালা। কিন্তু চাইলেও সম্ভবত আজ উইনিং কম্বিনেশন নিয়ে মাঠে নামতে পারছে না বাংলাদেশ। একাদশে বদল আসছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেকেই আলো ছড়ানো লেগস্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ইনজুরিতে পড়ায়।