লক্ষীপুরে পান চাষে কৃষকের মুখে হাসি অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯ শ্যামলী নিউজ ডেস্ক : লক্ষীপুরে পান চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে চাষিরা। খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন পান চাষে আগ্রহ বাড়ছে এ অঞ্চলের চাষিদের। অনুকূল আবহাওয়া, সময়মতো বৃষ্টিপাত ও সুষম সারের ব্যবহারের ফলে এবার পানের উৎপাদনও হয়েছে ভালো। এ অঞ্চলের পান সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদাও রয়েছে বেশ ভালো। এখানকার উৎপাদিত পান জেলাবাসীর চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। এবার উৎপাদিত পান থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আয় হবে বলে আশা করছে জেলা কৃষি বিভাগ। এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছে, কৃষিভিত্তিক প্রয়োজনীয় ঋণ সুবিধা ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতাপেলে লক্ষীপুরে পান চাষে বিপ্লব ঘটবে। পাশাপাশি এ অঞ্চলের পান বিদেশে রফতানি করে জাতীয় অর্থনীতিতেও অবদান রাখা সম্ভব হবে।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, লক্ষীপুরে বছর জুড়ে পানের আবাদ ও ফলন হলেও আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিন ও কার্তিক মাসে পানের ফলন হয় সবচেয়ে বেশি। লক্ষীপুরে এবার ৫০৫ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে পান পল্লী হিসেবে খ্যাত জেলার রায়পুর উপজেলার ক্যাম্পেরহাট ও হায়দরগঞ্জ এলাকায় পানের আবাদ হয়েছে প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে। আর খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায়, দিন দিন এ অঞ্চলে পান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে একবার আবাদকৃত পানের বরজ থেকে ৯-১০ বছর পর্যন্ত পান তোলা যায়। চাষিরা জানায়, পান চাষ একটি লাভজনক ফসল। পান চাষাবাদে খরচের তুলনায় লাভ বেশি। এখানকার উৎপাদিত পান সুস্বাদু হওয়ায় তা জেলাবাসীর চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। এতে করে পানের বাজার দরও ভালো পাচ্ছে তারা। এখানে প্রতি বিড়া (৮০ পিস) পান এখন প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৩০ টাকায়। বাজার দর ভালো পেয়ে বেশ লাভবান হচ্ছে কৃষক। পানের সবচেয়ে বড় পাইকারি হাট বসে রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জ বাজারে। সপ্তাহে দুই দিন এই হাটে লাখ লাখ টাকার পান বিকিকিনি হয়। এ ছাড়াও পানের পাইকারি বাজার রয়েছে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ বাজার, মান্দারী বাজার, রায়পুরের নতুন বাজার, উদমারা সর্দার স্টেশন ও ক্যাম্পের হাট বাজার। পান চাষে কৃষকের মুখে হাসি লক্ষীপুর সদর উপজেলার চর রুহিতা গ্রামের পানচাষি বাবুল মজুমদার জানান, তিনি ২০ শতক জমিতে পানের আবাদ করেছেন। এতে বেশ লাভবান হয়েছেন তিনি। ভবিষ্যতে পানের বজর আরও বাড়ানোর কথা জানান এই কৃষক। রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জ এলাকার পানচাষি জয়নাল হোসেন জানান, তার এক একর জমিতে পানের বরজ রয়েছে। তিন বছরে এ বরজ তৈরি ও আবাদ করতে তার সাড়ে ৫ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। তিনি এ পর্যন্ত দশ লাখ টাকার বেশি পান বিক্রি করেছেন। পান চাষাবাদের মাধ্যমেই তিনি আর্থিক সচ্ছলতা পেয়েছেন।এদিকে রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জ ও ক্যাম্পেরহাট এলাকার মতিলাল, নারায়ণ ও শম্ভুসহ কয়েকজন পানচাষি জানায়, পানের বরজে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ দেখা দিলে সঠিক সময়ে কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতা পায় না তারা। এ ছাড়া সহজ শর্তে সরকারি ঋণ ও কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় কীটনাশকের সহায়তা পেলে পান চাষাবাদে আরও বেশি লাভবান হতে পারত বলে জানায় তারা। এ ব্যাপারে কয়েকজন খুচরা বিক্রেতা জানায়, বর্তমানে পানের বাজার দর ভালো থাকায় চাষিদের পাশাপাশি তারাও লাভবান হচ্ছে।লক্ষীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কিশোর কুমার মজুমদার জানান, এবার উৎপাদিত পান থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আয় হবে। পান চাষে কৃষকদের কারিগরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তবে পানচাষিদের সরকারি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় আনা গেলে কৃষকরা পান চাষে আরও ভালো করতেন বলে জানান এ কর্মকর্তা। Related posts:কোমলপানীয়র সঙ্গে নেশাদ্রব্য খাইয়ে কিশোরীকে ধর্ষণএকাধিক শারীরিক সম্পর্কে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়েমাহমুদ ফয়সাল‘র “ভেজা চোখ” Post Views: ৩৫২ SHARES ফিচার বিষয়: