স্মার্টফোনের ব্যাটারির চার্জ বেশিক্ষণ থাকে যেভাবে অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯ শ্যামলী নিউজ ডেস্ক : স্মার্টফোনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ হলো ব্যাটারি। ফোনের ব্যাটারি অচল তো সব কাজ পণ্ড। আবার ব্যাটারির সামান্য ত্রুটি থেকে বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। বর্তমানে প্রায় সব ফোন নির্মাতা কোম্পানিই লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার করে থাকে। আশার কথা হলো, একটু খেয়াল রাখলেই এই ব্যাটারি একবার চার্জ দিয়ে লম্বা সময় ধরে ব্যবহার করা যায়। চলুন একনজরে জেনে নেওয়া যাক স্মার্টফোনের ব্যাটারির চার্জ বেশিক্ষণ ধরে রাখার উপায়গুলো: ভুল ধারণা বাদ দিনঅনেকেই ভাবেন যে, স্মার্টফোনের ব্যাটারি একবারে শতভাগ চার্জ দিতে হয়। আর চার্জ ৯ থেকে ১০ শতাংশে নেমে না আসা পর্যন্ত ফের চার্জ দেওয়া উচিত নয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শতভাগ চার্জ অথবা চার্জ সম্পূর্ণ খরচ করলে বরং লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। এতে করে ব্যাটারির মধ্যে থাকা রাসায়নিক দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে ব্যাটারির আয়ু কমে আসে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাটারির চার্জ ৫০ থেকে ৮০ শতাংশের মধ্যে রাখা উচিত। খেয়াল রাখতে হবে, চার্জ কমতে কমতে যেন ২০ শতাংশের নিচে নেমে না যায়। রাতভর স্মার্টফোন চার্জে বসিয়ে রাখলেও সমস্যা নেই। কারণ, বর্তমানের অনেক স্মার্টফোনই নিজ থেকে বুঝতে পারে, কখন সেটি শতভাগ চার্জ হয়েছে। এরপর নিজ থেকেই ফোনটি চার্জ নেওয়া বন্ধ করে দেয়।ফোন কোম্পানিগুলোর প্রায় সবই এখন লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার করে। এই ব্যাটারি একবার চার্জ করে লম্বা সময় ধরে ব্যবহার করা যায়। ছবি: রয়টার্স তাপমাত্রা নিয়ে সচেতনতালিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির কেন্দ্রে থাকা রাসায়নিক পদার্থ কখনোই খুব বেশি বা খুব কম তাপমাত্রা পছন্দ করে না। তাই ফোনকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করা উচিত। খুব কম অথবা বেশি তাপমাত্রা ব্যাটারির ভেতরের ক্ষয় ত্বরান্বিত করে। তাই গাড়ির ইঞ্জিন বরাবর অথবা সরাসরি সূর্যের আলোতে স্মার্টফোন রাখা উচিত নয়। এতে ব্যাটারি তাপ শোষণ করে বেশি উষ্ণ হয়ে পড়তে পারে।ব্যাটারির তাপমাত্রা দেখার জন্য এখন স্মার্টফোনগুলোতে কিছু অ্যাপ্লিকেশন দেওয়া থাকে। এ ছাড়া গুগলের ‘প্লে স্টোর’ অথবা অ্যাপলের ‘আই স্টোর’-এ বেশ কিছু অ্যাপ পাওয়া যায়। সেগুলো ব্যবহার করে ব্যাটারির অবস্থার বিষয়ে নিয়মিত জানা যায়। ধৈর্য ধরলে কী হয়?তারবিহীন চার্জিং প্রযুক্তি বেশ সাড়া ফেলেছে। পাশাপাশি ফাস্ট-চার্জিং প্রযুক্তিও এসে গেছে। মাত্র কয়েক মিনিটেই ব্যাটারি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত চার্জ করা যাচ্ছে। তবে এসব প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এখনো ব্যাটারিসংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি অতটা এগোয়নি। লিথিয়াম-আয়ন এখনো ‘ধীরে চলো’ নীতিতে চলছে। খরগোশের মতো নয় বরং কচ্ছপের গতিতে চার্জ করলে ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী হয়। তবে এর অর্থ এই নয় যে, ফাস্ট-চার্জিং কিংবা তারবিহীন চার্জিং প্রযুক্তি খারাপ। কিন্তু এই সুবিধাগুলো নিতে হলে অবশ্যই কিছু বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। ফাস্ট–চার্জিং প্রযুক্তির জন্য অবশ্যই যে কোম্পানির স্মার্টফোন তারই চার্জার ব্যবহার করতে হবে। তারবিহীন চার্জিংয়ের ক্ষেত্রেও একই নীতি প্রযোজ্য। তবে ওই স্মার্টফোন কোম্পানি যদি অন্য কোনো পক্ষের নির্মিত চার্জার ব্যবহারে বৈধতা দেয়, তবে তা ব্যবহার করা যেতে পারে। চার্জ রাখুন মাঝামাঝিকোনো কারণে স্মার্টফোন কিছুদিনের জন্য ব্যবহার না করলে, দুটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। প্রথমত, ব্যাটারি ৫০ শতাংশের কাছাকাছি চার্জ দিয়ে রাখা উচিত। ব্যাটারির চার্জ সম্পূর্ণ ফুরিয়ে অথবা পূর্ণ চার্জ অবস্থায় রাখার চেয়ে মাঝামাঝি রাখাটাই উত্তম। ট্যাবের ক্ষেত্রেও একই নীতি মেনে চলা উচিত। দ্বিতীয়ত, পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এমন জায়গাতে রাখা যাবে না, যেখানে ফোন অতিরিক্ত উষ্ণ বা শীতল হয়।ব্যাটারির চার্জ যেমন পুরোপুরি শেষ করা উচিত নয়, তেমনি ব্যাটারি শতভাগ চার্জ দেওয়াও উচিত নয়। ছবি: রয়টার্স ‘আপডেট’ থাকুনব্যাটারি দীর্ঘদিন ব্যবহার উপযোগী রাখতে ফোনের সফটওয়্যার আপডেট করার বিকল্প নেই। আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড দিন দিন বেশ উন্নতি করছে। এই অপারেটিং সিস্টেমগুলো ইদানিং নিজ থেকেই ব্যাটারি–সংক্রান্ত অনেক বিষয়ের ওপর নজরদারি করার সক্ষমতা অর্জন করছে। তাই সফটওয়্যারগুলোর সর্বশেষ ভার্সন ব্যবহারের চেষ্টা করতে হবে।অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার হালনাগাদ করা থাকলে অন্য সুবিধাও রয়েছে। সর্বশেষ অ্যাপ বা সফটওয়্যার ভার্সন ফোনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে জোরদার করে। এতে ফোনগুলো ‘ম্যালওয়্যার’ অথবা ‘ভাইরাস’ প্রতিহত করতে পারে। একবার চার্জ দিয়ে বেশি সময় ব্যবহারপ্রতিটি ব্যাটারির নির্দিষ্ট জীবনকাল আছে। কত দিন একটি ব্যাটারি সেবা দিতে পারবে সেটি নির্ধারণ করে দেয় এর ভেতরে থাকা রাসায়নিক উপাদান। প্রতিবার শতভাগ চার্জ আর পুরোপুরি ব্যবহার ব্যাটারির জীবনকালকে সীমিত করে ফেলে। এ জন্য একবার চার্জ করে দীর্ঘ সময় ব্যবহার করার চেষ্টা করা উচিত। কিছু বিষয়ের দিকে একটু নজর দিলে চার্জ কম খরচ করেও দীর্ঘ সময় ফোন ব্যবহার করা যায়। যেমন, মোবাইল স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা কমিয়ে রাখা ও ফোনের স্পিকারের পরিবর্তে হেডফোন দিয়ে ভিডিও দেখা ও অডিও শোনা ইত্যাদি।কিছু অ্যাপ (ফেসবুক, মেসেঞ্জার, গুগল ম্যাপ ইত্যাদি) আছে, যেগুলো ব্যাটারি চার্জ খরচ করে বেশি। এসব অ্যাপের ব্যবহার যত কম করা যায় ততই ভালো। অন্যদিকে ব্লুটুথ ও জিপিএস সেবা দ্রুতই ব্যাটারির চার্জ ফুরিয়ে ফেলে। তাই প্রয়োজন ছাড়া এগুলো বন্ধ রাখা যেতে পারে। তথ্যসূত্র: ওয়্যারড Related posts:আসছে আইফোন ১১চ্যাটিংয়ে কেউ মিথ্যা বলছে কিনা বোঝার উপায়আরেকটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে চট্টগ্রামে Post Views: ৪৭৫ SHARES তথ্য প্রযুক্তি বিষয়: