গরুর দেশীয় জাত হারানোর বিনিময়ে আধুনিক জাত দরকার নেই : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

প্রকাশিত: ১০:৫৭ অপরাহ্ণ, মে ১৩, ২০২৫

দেশীয় গরুর জাত হারানোর বিনিময়ে আধুনিক জাতের প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।মঙ্গলবার (১৩ মে) রাজধানীর খামারবাড়ির কেআইবি মিলনায়তনে ‘দেশীয় গবাদিপশুর জাত উন্নয়ন : চ্যালেঞ্জ ও অগ্রগতির পথ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। সেমিনারের আয়োজন করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, দেশীয় জাত হারানোর বিনিময়ে আমাদের আধুনিক জাত দরকার নেই। দেশীয় জাত রক্ষা করে আমরা যেন দুধ ও মাংস উৎপাদন করতে পারি, সেই জন্য কাজ করতে হবে।
করপোরেট কোম্পানির উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, শুধু মুনাফার জন্য না, দেশের প্রয়োজনে কাজ করতে হবে।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, দেশীয় জাতের গবাদিপশু হারিয়ে যাচ্ছে, কথাটা ঠিক নয়। উন্নত জাতের কথা বলে বিদেশি নানা জাত আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, ফ্রিজিয়ান আর ক্রসবিট ছাড়া উপায় নেই। আমি মনে করি, এটা প্রশ্নবিদ্ধ কথা। দেশীয় গরু হারিয়ে যাওয়া ঠেকাব, এটা ঠেকানোর জন্য আমরা একটা রোডম্যাপ নিতে পারি। এটা খুব জরুরি। আমরা বিদেশি নানা জাত নিয়ে আসছি, ওটা টেকসই না। এর পেছনে নানা সময় ও শ্রম ব্যয় করছি। কিন্তু টিকছে না।
দেশীয় জাতের গরু সংরক্ষণ করতে পারলে মন্ত্রণালয়ের নামকরণ সার্থক হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বিদেশি জাত যারা প্রমোট করেছেন, তারা দেশীয় গরুর জাতের বিষয়ে নেগেটিভ কথা বলেছেন। এখন বলছেন, খামারিরা কিছু বোঝে না। দেশীয় জাত সংরক্ষণ করতে পারলে প্রাণিসম্পদ নামকরণ সার্থক হবে। সিমেন (বীজ) এখন ব্যবসার পর্যায়ে চলে গেছে। এটা দুঃখজনক।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, চট্টগ্রামের মানুষের উত্তরবঙ্গের মানুষের চরিত্রে মিল নেই। খাওয়া-দাওয়া, স্বভাবে মিল নেই। আমরা মানুষেরা জোনে ভাগ হয়ে আছি। তাহলে প্রাণীরাও তাই, আল্লাহর সৃষ্টি। অঞ্চলভিত্তিক দেশীয় গরুর জাত সংরক্ষণে আমাদের প্রকল্প নিতেই হবে। দেশীয় জাত পালনে আমরা প্রণোদনা দিচ্ছি না কেন। দেশীয় জাত পালন করলে এই সুবিধা দেওয়া হবে। তাহলে কৃষকেরা অবশ্যই দেশীয় জাত পালন করবে।
অনুষ্ঠানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান সভাপতিত্ব করেন। আরও বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক প্রমুখ।