আজ শ্রীবরদী হানাদারমুক্ত দিবস অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১:৫৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৬, ২০১৯ স্টাফ রিপোর্টার : একাত্তরের ৬ ডিসেম্বর। খণ্ড খণ্ড কয়েকটি যুদ্ধের পর এদিন পরাজিত হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। মুক্ত হয় শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা। এ যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে শহীদ হন ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা। হত্যা করা হয় অনেক গ্রামবাসীকে। যুদ্ধকালীন সময়ের কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা জানান, ৪ ডিসেম্বর ধানুয়া কামালপুর মিত্র বাহিনীর আক্রমণে হেরে যায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। পরে পাকিস্তানি সেনারা ছুটে আসে শ্রীবরদীর দিকে। এ সংবাদ পান ১১নং সেক্টরের কর্নেল আবু তাহের। তার নেতৃত্বে গেরিলা সৈনিকদের নিয়ে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন মুক্তিযোদ্ধারা। কর্নেল তাহের আরো জানতে পারেন ৫ ডিসেম্বর রাতে কামালপুর থেকে পার্শ্ববর্তী উপজেলা বকশিগঞ্জ ও শ্রীবরদী হয়ে পাকিস্তানি মেজর আইয়ুব জামালপুর যাবে। সেই সূত্র ধরে শ্রীবরদীর হতে বকশিগঞ্জ সড়কের টিকরকান্দি এলাকায় সন্মুখ যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয় মুক্তিযোদ্ধারা। মেজর আইয়ুব সাজোয়া গাড়ি নিয়ে সেই রাস্তায় আসার পথে শুরু হয় যুদ্ধ। রাতভর চলে মুখোমুখি যুদ্ধ। বিস্ফোরিত হয় স্থলমাইন। চলে গুলি বর্ষণ। এলাকার লোকজন ভয়ে ঘরবাড়ি ফেলে ছুটে যায় নিরাপদ আশ্রয়ে। অবশেষে এ যুদ্ধে নিহত হয় মেজর আইয়ুবসহ পাকিস্তানি সেনারা। পাকিস্তানি সেনাদের পরাজিত হওয়ার খবর ছড়ে পড়ে চারিদিকে। ভোরে শতশত লোক জড়ো হয় শ্রীবরদী হতে বকশিগঞ্জ সড়কে। সবার কণ্ঠে মুখরিত হয়ে ওঠে ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি’। এ সময় সেখান থেকে দলে দলে মানুষ আর মুক্তিযোদ্ধারা আসে শ্রীবরদী বাজারের পুরাতন হাসপাতাল মাঠে। এখানে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ওইসব মুক্তিকামী মানুষসহ মুক্তিযোদ্ধারা। সেই পাক হানাদার বাহিনীর পরাজিত হওয়ার বর্ণনা দেন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের খেতাব প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জহুরুল হক মুন্সী (বীর প্রতীক ‘বার’)। তিনি জানান, এদিন ছিল শ্রীবরদীর জন্যে বিজয়ের দিন। যুদ্ধে মেজর আইয়ুবসহ পাকিস্তানি সেনারা পরাজিত হওয়ার কারণে শেরপুর ও জামালপুরের পাকিস্তানি সেনারা আরো দুর্বল হয়ে পড়ে। সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমিনুল ইসলাম জানান, সেই সময় কাটাখালী, ফুলকারচর, তেনাচুড়া, টিকরকান্দি, রাঙাজানসহ বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ হয়েছে। পাকিস্তানি সেনারা অনেক বাড়ি ঘরে হামলা করেছে। লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। অনেক নারী হয়েছে ধর্ষণের শিকার। শহীদ হন ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা। একাত্তরের স্মৃতি বিজরিত দিনগুলো আজো মানুষ ভুলতে পারেনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা আকতার বলেন, ৬ ডিসেম্বর শ্রীবরদী মুক্ত দিবস। এ উপলক্ষে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা। এদিনটি আরো বর্ণাঢ্যময় করে তোলে নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতার চেতনায় বিকশিত করতে সচেতন মানুষসহ সকলকে যুগোপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। Related posts:বকশীগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে যুবকের মৃত্যুইবি ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদাসহ ৫ শিক্ষার্থী বহিষ্কাররাজধানীর পল্লবীতে তিন বান্ধবী নিখোঁজের ঘটনায় মামলা Post Views: ২৫৮ SHARES সারা বাংলা বিষয়: