শ্রীবরদীতে ইউপি নির্বাচনে ফলাফল পাল্টানোর চেষ্টা, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা গ্রেফতার

প্রকাশিত: ৯:০৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০২১

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার রাণীশিমুল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে একটি কেন্দ্রের ফল পাল্টানোর চেষ্টার অভিযোগে কে এম আবদুল্লাহ আল জসিম (৪০) নামে এক প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২৭ ডিসেম্বর সোমবার রাতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হক বাদী হয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে নির্বাচনী ফলাফল পাল্টানোর চেষ্টার অভিযোগে ওই প্রিজাইডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শ্রীবরদী থানায় মামলা করেন। পরে ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। গ্রেফতার জসিম উপজেলার রাণীশিমুল ইউনিয়নের বিলভরট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ছিলেন এবং তিনি উপজেলার কাকিলাকুড়া ফাজিল মাদ্রাসার পদার্থবিজ্ঞানের প্রভাষক ও শঙ্করঘোষ গ্রামের মো. সিরাজদ্দৌলার ছেলে। এর আগে গত রবিবার মধ্যরাতে তাকে আটক করে শ্রীবরদী থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৬/৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে। মঙ্গলবার দুপুরে ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ড আবেদনসহ তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বৃহস্পতিবার রিমান্ডে বিষয়ে শুনানীর তারিখ ধার্য করে তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান মাহমুদ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার ভোট গণনা শেষে আবদুল্লাহ আল জসিম ওই কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট প্রার্থী ও অন্য কর্মকর্তাদের নির্বাচনী ফলাফল শিট বিতরণ করেন। এরপর ওইদিন সন্ধ্যায় তিনি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনী নিয়ন্ত্রণ কক্ষে গিয়ে ফলাফল শিট জমা দেন। কিন্তু ওই ফলাফল শিটে ঘষামাজার চিহ্ন পাওয়া যায় এবং কেন্দ্রে বিতরণ করা ফলাফল শিটের সঙ্গেও গরমিল দেখা যায়। এতে নির্বাচনী নিয়ন্ত্রণ কক্ষে দেওয়া শিটে ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ সোহাগের প্রাপ্ত ৬৭১ ভোটের স্থলে ৩৭১ এবং নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাসুদ রানার প্রাপ্ত ৪৯৭ ভোটের স্থলে ৭৯৭ ভোট দেখানো হয়। বিষয়টি দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের নজরে আসার পরপরই আবদুল্লাহ আল জসিম কৌশলে নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে সটকে পড়েন। এরপর ওই দিন মধ্যরাতে শ্রীবরদী থানা পুলিশ প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল জসিমকে আটক করে। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী ফলাফলের শিট ঘষামাজা (টেম্পারিং) করার কথা স্বীকার করেন আবদুল্লাহ আল জসিম। পরে তাকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার বলেন, প্রাথমিক তদন্তে আবদুল্লাহ আল জসিমের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি জানানো হয়। এরপর কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সোমবার রাতে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৬ ডিসেম্বর রবিবার অনুষ্ঠিত রাণীশিমুল ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল হামিদ ৪ হাজার ৯৭৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী মাসুদ রানা পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৪৮ ভোট।