প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরেও এমপিও ভুক্তি হয়নি নালিতাবাড়ীর চিনামারা ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা

প্রকাশিত: ১০:০৩ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ৯, ২০২০

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি ॥ গত শুক্রবারের দুপরের ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার চিনামারা ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার ঘর। ঝড়ে ঘর উড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের মাটির প্লাষ্টিক মাদুরে বসেই ক্লাস করছে। এদিকে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরেও এমপিওভুক্তি হয়নি। বিল বেতন না পাওয়ায় মাদরাসার শিক্ষকরা করুন দৈন্য দশায় মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছে।
জানা গেছে, গত শুক্রবার ৬ মার্চ দুপুরে আর্কস্মিক ঝড় শুরু হলে মাদরাসার ২টি ঘরের মধ্যে টিনের কাচা মাটির ঘরটি হতে চাল ভেঙ্গে মুচরিয়ে উড়িয়ে নিয়ে পাশের ক্ষেতে নিয়ে ফেলে। এ অবস্থায় মাদরাসার ৪টি কক্ষই এখন ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। ক্লাস নেওয়ার মত রুমের অভাবে প্রায় দিনই শিক্ষার্থীদের মাদরাসার মাঠে প্লাষ্টিক মাটির মাদুরে বসিয়ে ক্লাসের বাকি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে শিক্ষকদের। ৩দিন অতিবাহিত হলেও আর্থিক অনাভাবে মাদরাসার ঘর মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। ফলে শিক্ষার্থীরা মাটিতে বসেই ক্লাস করছে।


মাদরাসা সূত্র জানায়, নালিতাবাড়ী শহর হতে ৬কিঃ মিঃ দূরে ২০০৩ সালে চিনামারা ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয় উপজেলার নালিতাবাড়ী ইউনিয়নের ভোগাই নদী সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু পার্কের সন্নিকটে। ২০০৫ সালে ১ম হতে ৯ম শ্রেনী পর্যন্ত পাঠদান অনুমতি পায়। ১০ জন শিক্ষক ৩জন কর্মচারী আর ২৫৮ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ৭০% এর অপরে ফলাফল নিয়ে মাদরাসাটি এগিয়ে চলছে এখনও। যেহেতু গ্রামিন মাদরাসা তাই আলাদাভাবে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট বা কোচিং না পড়তে হয় সেজন্য ক্লাসেই পড়া আদায় করার মানসিকতা, ক্রিড়া ও সাংস্কৃতিতে মনোযোগি করে এলাকার অভিভাবকদের মনেযোগ আকর্ষন করতে পেরেছে প্রতিষ্ঠানটি। পাশ্ববর্তী জায়গায় উপবৃত্তি, খিচুরী, বিস্কুট দেওয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকা সত্বেও এখানে যত্ন করে আধুনিক দ্বীনিশিক্ষা ব্যবস্থা চালু থাকায় উৎসাহ নিয়ে সেখানে শিক্ষার্থীরা পড়তে আসে বলে জানায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা। এদিকে প্রতিষ্ঠানটিতে ১টি ২০ ফুট গভীর টিউবওয়েল থাকলেও তাতে আয়রন। শুকনো মৌসুমে পানির উঠার সমস্যা তো আছেই। এছাড়াও নেই একাডেমিক ভবন, আসবাবপত্র, কম্পিউটার, গভীর নলকূপ, নেই মাঠের মাটি ভরাট, বাউন্ডারী ওয়াল। এতকিছু সমস্যা থাকা সত্বেও প্রতিষ্ঠানটির উপড় প্রাকৃতিক দূযোর্গ যেন মরার উপড় খড়ার ঘা বলে মনে করেন এলাকাবাসী।
চিনামারা ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার নুরুল আমিন বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে আছি কোন বেতন ভাতা ছাড়াই। শিক্ষার্থীদের সবাই অতিকষ্টে করুন দৈন্যদশার মধ্যেই অধৈর্য্য না হয়ে শিক্ষার্থীদের পড়িয়েই যাচ্ছি। তারা এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। তারপরেও যে প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যায়নি এজন্য শুকরিয়া আদায় করছি। আমরা এমপিও ভুক্তির জন্য উর্দ্ধতন মহলের কাছে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি। পাশাপাশি ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানটি। এমনিতেই মানুষের সাহায্যতে চলে মাদরাসাটি তার উপর পড়েছে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যা হোক আল্লাহ যা করেন সব ভাল। সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।