শেরপুরে নিষিদ্ধ পলিথিন, শব্দ-বায়ু দূষণ রোধে মতবিনিময় সভা

প্রকাশিত: ৩:৫৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেরপুরে নিষিদ্ধ পলিথিন, শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ, ডেঙ্গুরোধে সচেতনতা করার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ রজনীগন্ধায় জেলা প্রশাসন ও নাগরিক প্ল্যাটফরম জনউদ্যোগ আয়োজিত ওই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব।
জনউদ্যোগ আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ.বি.এম. এহছানুল মামুন, বিশেষ অতিথি হিসেবে হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফিরোজ আল মামুন, জেলা পরিবেশ বিষয়ক অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রাসেল নোমান ও জেলা বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক (প্রকৌশল) আব্দুল্লাহ আল মামুন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার নুরুল ইসলাম হিরু, জেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী জয়শ্রী দাস লক্ষ্মী, প্রেসক্লাব সভাপতি শরিফুর রহমান, মানবাধিকার কর্মী শামীম হোসেন, জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হান্নান, জেলা মাইক প্রচারক সমিতির সভাপতি নুরুল আমিন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ পাঠ করেন সাংবাদিক হাকিম বাবুল। মূলপ্রবন্ধে তিনি বলেন, দেশে প্রতিনিয়ত যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে মোটর সাইকেল-সিএনজি, ইজিবাইকের সংখ্যা। অবকাঠামোগত নির্মাণ চলছে দেশজুড়ে। এসব কারণে শব্দ ও বায়ূ দূষণের মাত্রা বাড়ছে। শব্দ দূষণের কারণে দিন দিন বধিরের সংখ্যা বাড়ছে। মানুষের হৃদকম্পন বেড়েছে। উচ্চ রক্তচাপ, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব হয়-এমন রোগীর সংখ্যাও আশংকাজনক হারে বাড়ছে। বায়ূ দূষণের কারণে অ্যাজমা, শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিলতা দেখা দিচ্ছে। শেরপুরেও এখন শব্দ দূষণের মাত্রা নির্ধারিত সীমার প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে জনউদ্যোগ শেরপুর কমিটির পক্ষ থেকে ১৩ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। ওইসব প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে-প্রচার মাইকের যথেচ্ছ প্রচার-প্রচারণা বন্ধ করতে হবে। স্থানীয়ভাবে মাইক প্রচারের ক্ষেত্রে শব্দযন্ত্রের মাত্রা বা ডেসিবল নির্দিষ্ট করাসহ সময় নির্ধারন ও সুনির্দিষ্ট গাইড লাইন প্রণয়ন, সভা-সমাবেশ, ওয়াজ মাহফিল, বয়ান, হিন্দুদের পূজা, কীর্ত্তনসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত মাইক এবং সাউন্ড সিস্টেম অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে লাগানো কিংবা দূরবর্তী স্থানে লাগানো বা স্থাপন বন্ধ করা, বন-বনানী, পাহাড়, প্রাণ-প্রকৃতি সংরক্ষণ ও বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাস নিশ্চিত করতে গজনী অবকাশ, মধুটিলা ইকোপার্কসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলোকে ‘সাইলেন্ট জোন’ ঘোষণা করে সেখানে মাইক-হর্ণ ব্যবহার নিষিদ্ধ করার দাবি করা হয়েছে। নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত মিকচার মেশিন এবং খোয়া ভাঙ্গা মেশিনের উচ্চ শব্দ এবং ধুলা পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছে। ওইসবের শব্দ দূষণ ও বায়ূ দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিকল্প চিন্তা করাসহ শব্দ ও বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলার ওপর জোর তাগিদ দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি শব্দ ও বায়ূ দূষণ রোধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ ঘটাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, পরিবহন মালিক-শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, স্কাউট-গার্লস গাইড, রেডক্রিসেন্ট-বিএনসিসি, সাংবাদিক-পেশাজীবীসহ সকল শ্রেনীপেশার মানুষকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে জনপ্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, পরিবহন মালিক-শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, স্কাউট-গার্লস গাইড, রেডক্রিসেন্ট-বিএনসিসি, দায়িত্বরত জেলার সাংবাদিক-সহ শতাধিক সুধীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।