ঝিনাইগাতীতে ইউএনও রুবেল মাহমুদের দায়িত্ব পালনে সফলতার দুই বছর

প্রকাশিত: ৯:৪৪ অপরাহ্ণ, মে ৮, ২০২০

হারুন অর রশিদ দুদু ॥ শেরপুর জেলার সীমান্তঘেঁষা ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুবেল মাহমুদের দায়িত্ব পালনের সফলতার দুই বছর পূর্তি হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারহানা করিমের প্রস্থানের পর গত ৩০ এপ্রিল ২০১৮ ইং তারিখে শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে নতুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে রুবেল মাহমুদের নামে অফিস আদেশ হয়। এরপর গত ৩ মে ২০১৮ তিনি ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি ৩০তম বিসিএস ক্যাডার। প্রথম বারের মতো উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন ঝিনাইগাতীতে। ঝিনাইগাতীতে যোগদানের আগে তিনি নরসিংদী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত এবং এক সন্তানের জনক। ঝিনাইগাতীতে যোগদানের পরই তিনি গত ৩ মে ঝিনাইগাতী উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময় ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। প্রথম মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, আমি এখন নিজেকে ঝিনাইগাতীর বাসিন্দা মনে করি আর আমি প্রতিটি কার্য ঘন্টা ঝিনাইগাতীর উন্নয়নে কাজ করবো। পরবর্তী সময়ে প্রাক্তন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারহানা করিমের অসমাপ্ত সকল কাজ তিনি সম্পন্ন করেন। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তিনি জেলা প্রশাসকের দিক-নির্দেশনায় উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত করার বিষয়ে নজর দেন। প্রতিটি ইউপি চেয়ারম্যানকে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের দিক-নির্দেশনা দেন। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত শুদ্ধভাবে জাতীয় সঙ্গীত চর্চা এবং মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী এবং বাল্যবিবাহ ও ইভটিজিং বন্ধে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে কলেজ পর্যায়ে এসেম্বলী চালুরও উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি। পর্যটন সমৃদ্ধ শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার অন্যতম পর্যটন স্পট গজনী অবকাশের আকর্ষণ বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তিনি। এটাই ছিল এলাকাবাসীর প্রত্যাশা। এ উপজেলার ভূমিহীন জনগোষ্ঠীদের জন্য স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবেল মাহমুদ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবেল মাহমুদের নির্দেশনায় এখন উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের প্রতিটি দপ্তরেই আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। বৈশ্বিক মহামারীর রূপ নেওয়া নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব’র নির্দেশনায় ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ করোনা পরিস্থিতি শুরু থেকেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে মাইকিং, লিফলেট বিতরণসহ করোনা প্রতিরোধে সার্বিক কাজে নিয়োজিত আছেন তিনি। করোনা ভাইরাস থেকে দূরে থাকতে তিনি সরকারী খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি মানুষকে আরো বেশি খাদ্য সহায়তা প্রদান করার জন্য জেলায় সর্ব প্রথম ঝিনাইগাতী উপজেলায় করোনা তহবিল নামে একটি ব্যাংক হিসাব খুলে বিত্তবানদেরকে দানের আহবান জানালে বিত্তবানরা সাধ্য মোতাবেক দান শুরু করেন। ওই তহবিলের অর্থ দ্বারায় ঝিনাইগাতী বাসীর প্রাণপ্রিয় ইউএনও রুবেল মাহমুদ ঘরে থাকা মানুষদের খাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছেন। ইউএনও রুবেল মাহমুদ করোনা তহবিল ব্যাংক হিসাব খোলায় ঝিনাইগাতী উপজেলার ভিক্ষুক নাজিমুদ্দিন ভিক্ষার জমানো ১০ হাজার টাকা করোনা পরিস্থিতির কারণে (ঘরে থাকা মানুষকে সাহায্য করতে) ইউএনও’র করোনা তহবিলে জমা দেন। বিষয়টি বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রচার হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে। এতে ভিক্ষুক নাজিমুদ্দিনকে ঘর-বাড়ীসহ চলার উপযোগী করে দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। ইতিমধ্যেই নাজিমুদ্দিনের বাড়ীর কাজ শুরু করা হয়েছে। এতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবেল মাহমুদ ঝিনাইগাতী বাসীর কাছে আরো প্রিয় হয়ে যান। সর্বোপরি গেলো দুই বছরে তিনি ঝিনাইগাতী উপজেলা বাসীর উন্নয়নে একাধিক বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করায় ঝিনাইগাতীর সর্বস্তরের মানুষের কাছে তিনি একজন প্রিয় অভিভাবক হয়ে উঠেছেন।