শ্রীবরদীতে প্রেমিকের বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ায় বিষপানে কিশোরীর আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ১২:৪৭ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৬, ২০১৯

শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি ॥ শেরপুরের শ্রীবরদীতে প্রেমিকের অন্যত্র বিয়ে ঠিক হওয়ায় হতাশায় অবশেষে বিষপানে আত্মহত্যা করল ১৫ বছরের এক কিশোরী। ঘটনাটি ঘটেছে ৪ নভেম্বর সোমবার রাতে উপজেলার কুড়িকাহনীয়া ইউনিয়নের চিথলিয়া গ্রামে। ওই ঘটনার পর থেকেই প্রেমিক সোহেল, তার বাবা মোসা আলী ও তার পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে পলাতক রয়েছে। নিহত রাবেয়া খাতুন ওরফে আভি (১৫) চিথলিয়া গ্রামের মনোহারী ব্যবসায়ী আজাহার আলীর কন্যা। সে ২০১৬ সালের জেএসসি পরীক্ষার্থী থাকলেও পরীক্ষা দেয়নি। বর্তমানে সে বাড়ির পাশে একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করছিল। আজাহার আলীর ৩ কন্যা ও ১ পুত্রের মধ্যে সে ২য় সন্তান। মঙ্গলবার সকালে নিজ বাড়ি থেকে রাবেয়া খাতুনের লাশ উদ্ধার করে শ্রীবরদী থানা পুলিশ।
জানা যায়, ছোটবেলার খেলার সাথী। এরপর একই এলাকায় দু’জনের বেড়ে উঠা। বাড়ির পাশে বাড়ি হওয়ায় একপর্যায়ে দু’জনের মাঝে গড়ে উঠে প্রেম-ভালবাসা। ঘটনাটি জানাজানি হলে প্রেমিক সোহেলের বাবা তার ছেলেকে রাবেয়ার সাথে যোগাযোগ করতে বাঁধা দেয়। শুরু হয় দু’জনের মাঝে বিচ্ছেদের দেয়াল। সোহেলের বাবা রাবেয়া ও সোহেলের ভালবাসাকে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। মোটা অংকের যৌতুক নিয়ে পাশ্ববর্তী চাউলিয়া গ্রামে আগামী বৃহস্পতিবার সোহেলের বিয়ে ঠিক করে তার পরিবার। বিয়ের কথা শুনে রাবেয়া তার বাবাকে ঘটনাটি খুলে বললে মেয়ের সুখের কথা ভেবে সোহেলের বাবা চিথলিয়া গ্রামের মোসা মিয়ার কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায় আজহার আলী। এতে সাড়া দেয়নি সোহেলের বাবা। যৌতুক বাবদ দেড় লক্ষ টাকা দিলেও ছেলেকে তার মেয়েকে দিয়ে বিয়ে করাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় মোসা মিয়া। আর এতেই দিশেহারা হয়ে পড়ে কিশোরী কন্যা আভি। একপর্যায়ে সোমবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে নিজ বসতবাড়িতেই বিষ পান করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সে।
শ্রীবরদী থানার এসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, নিহত রাবেয়া খাতুনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই ঘটনার পর থেকেই সোহেল ও তার পরিবার পলাতক রয়েছে।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন তালুকদার বলেন, ওই ঘটনায় মেয়েটির বাবা আজহার আলী শ্রীবরদী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঝিনাইগাতীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১৮ ড্রেজার ধ্বংস
ঝিনাইগাতী প্রতিনিধি ॥ শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সোমেশ্বরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ১৮টি ড্রেজার মেশিন যন্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে। ৫ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি ও সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ওই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবেল মাহমুদের নেতৃত্বে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদুল হাসানসহ অন্যান্যরা ওই অভিযানে অংশ নেন।
জানা যায়, সীমান্তবর্তী সোমেশ্বরী নদীর ঝিনাইগাতী উপজেলার তাওয়াকুচা ও শ্রীবরদী উপজেলার খাড়ামুড়া এলাকায় স্থানীয় বালুদস্যুরা বেশকিছু দিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে বালুদস্যুরা বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলন করায় নদীর দু’পাড় ভেঙে পরিবেশের ভারসাম্য হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ে। গোয়েন্দা সংস্থার গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুরে সোমেশ্বরী নদীর ওই এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনরা করা হয়।
ওইসময় বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত ১৮ টি ড্রেজার মেশিন আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। সেইসাথে উত্তোলিত প্রায় ১শ ট্রাক সমপরিমাণ বালু আটক করা হয়। আটককৃত বালু কাংশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল হক ও স্থানীয় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা সুজন কুমার সোমের জিম্মায় রাখা হয়।